চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বৃষ্টির পানি জমে এখনো রয়েছে জলাবদ্ধতা। উপজেলার কিছু কিছু জায়গায় পানি কমতে শুরু করায় ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হচ্ছে। মাছের ঘের, পুকুর, কৃষকের রোপণকৃত আমন, আমনের বীজতলা, আখের খেত, বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি এমনকি রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য, কৃষি ও প্রকৌশলী খাতে প্রায় ৭০ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার অধিকাংশ অঞ্চল সিআইপি বাঁধের ভেতরে। এখানে বন্যার পানি তেমন প্রবেশ করতে না পরলেও পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় ১০/১২ দিন ধরে উপজেলাবাসী জলাবদ্ধতার মাঝে বসবাস করছেন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাছ চাষি এবং কৃষকরা। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা আছে এসব খাতে। টানা বর্ষণে ভেসে গেছে বহু মাছের ঘের, পুকুর ও কৃষকের ফসল। যারা আউশ অথবা আমন লাগাবেন তাদের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। লাখ লাখ কৃষক ধানের চারা লাগাতে পারছেন না অতিরিক্ত পানির কারণে।

গত ৪/৫ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় আস্তে আস্তে পানি কমতে শুরু করেছে। এতে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ। ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। কাঁচা রাস্তার মাটির ক্ষয় হয়েছে। সলিং রাস্তার মাটি সরে যাওয়াতে ইট সরে যাচ্ছে। পাকা রাস্তার কার্পেটিং নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার পাশে অনেক বড় বড় গাছ পড়ে গিয়ে রাস্তার অংশে গর্ত হয়ে আছে। পানির স্রোত রাস্তার যে পাশ দিয়ে নেমে গেছে সে অংশ ভেঙে গেছে। যারা আদাসহ শাক-সবজি চাষ করেছেন তাদের ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, উপজেলায় চাষকৃত জমি মোট ২৬৯৫ হেক্টর। ৪/৫ দিনের অতি বর্ষণের কারণে বেড়ির ভেতরে প্রায় ৭০০ হেক্টর জলাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মৎস্যখাতে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৯ কোটি টাকা। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল সরকার বলেন, আউশ ধান ৪৫ হেক্টর, রোপা আমনের বীজতলা ৯১ হেক্টর, রোপণকৃত আমন ৩১২ হেক্টর, বিভিন্ন জাতের গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি ৬৯ হেক্টর ও আখ ১৩ হেক্টরসহ মোট ৫৩০ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৩০ লাখ ২২ হাজার টাকা। ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রোপা আমনের পুনরায় বীজতলা তৈরির পরামর্শ দিয়েছি এবং কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে পুনরায় বীজ সরবরাহ শুরু করেছি।  

উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহাম্মদ বলেন, এখনো অনেক রাস্তা পানির নিচে। রাস্তাঘাট পুরোপুরি দৃশ্যমান হলে ক্ষতির পুরোপরি পরিসংখ্যান দেওয়া যাবে। আমাদের কাজ চলমান আছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু পরিমাপ করতে পেরেছি, তাতে উপজেলার প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

আনোয়ারুল হক/আরকে