কাপ্তাইয়ে ৪ ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নে ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মীকে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে বিএনপি ও ছাত্রদল পরিচয়ে একদল দুর্বৃত্ত।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে কেপিএম সিনেমাহল এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনার হত্যা মামলায় জামিনে আসা সোহেলের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক প্রথমে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিমকে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে রনি, রাফি, তুষার তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করে সোহেলের লোকজন। পরে তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। কোপানো ও মারধর করার পর হামলাকারীরা মিছিল করে, এ সময় আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা দ্রুত দোকান বন্ধ করে দেয়। আহত চারজনই চন্দ্রঘোণা ইউনিয়ন ও কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান নেতা।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এই ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া সোহেল হত্যা মামলার আসামি ও যুবদল কর্মী। বর্তমানে তিনি জামিনে বের হয়ে এলাকায় রয়েছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কাপ্তাই থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আহত আজিমের বড় ভাই মিজান জানান, আমার ভাই আগে রাজনীতি করত, এখন সক্রিয় না। তাকে কোনো কারণ ছাড়াই সোহেলের নেতৃত্বে রাসেল, মুরাদ, জিসানসহ কয়েকজন বাসায় ফেরার সময় পথ আটকে হাতুড়ি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। তার সারা শরীরের কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। আমার ভাইকে উদ্ধার করতে যাওয়া কয়েকজনকেও মারধর করেছে। হামলাকারীরা সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি নামাজ পড়ে বাসায় আসার পর ঘটনাটি শুনেছি, বিষয়টি দুঃখজনক। চন্দ্রঘোণায় আমরা এমন ঘটনা চাই না। ওখানে আসলে কী হয়েছে আমি বিস্তারিত জানি না।
এই ঘটনার বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা জানান, আমি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি।
কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াছিন মামুন বলেন, খবর পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে গেছি। চন্দ্রঘোনা সিনেমা হল এলাকায় দুই দল ছেলেপেলের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি। সেখানে গিয়ে দেখি মিছিলও করতেছে একটি পক্ষ। যারা মারামারি করেছে তারা আমাদের দলের কোনো পদে নাই।
মিছিলকারীদের বিএনপির স্লোগান দিচতে শোনা গেছে জানালে ইয়াছিন মামুন বলেন, ভাইরে, এখন দেখি সবখানে সবাই বিএনপি! এমন অনেককে বিএনপির মিছিল করতে দেখতেছি, যাদের আমরাও চিনি না।
কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ ইসলাম বলেন, কেপিএম এলাকায় বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের একটি মারামারির ঘটনা শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি যার নেতৃত্বে ঘটনা সে এখন আমাদের দলের কোনো পদে নেই। আমরা যেকোনো হামলা, নৃশংসতা, চাঁদাবাজি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ইতোমধ্যেই নেতাকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
মিশু মল্লিক/আরকে