জামালপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে শহরের দেওয়ানপাড়া মোড়ে একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ নেতকর্মী আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শুধুমাত্র জেলা বিএনপির নেতাদের ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। ভিডিও কনফারেন্স চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি ওই কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের কর্মী-সমর্থকরা। এতে সেখানে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। 

একপর্যায়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনির কর্মী-সমর্থকদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় কমিউনিটি সেন্টার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর ও পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে।

সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, জেলা বিএনপি যেভাবে ক্রাইটেরিয়া করেছে, ক্রাইটেরিয়া যদি সুষ্ঠুভাবে করতো, আমাদের ছেলেরা যারা ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে পড়ে তারা যেতে পারতো। ক্রাইটেরিয়াটা এমন অন্যায়ভাবে করছে যে তারা যেতে পারছে না। যারা ত্যাগী, এই ১৭ বছর জেল খেটেছেন, তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুন জেল খাটেননি। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলেন। এভাবে চলতে পারে না। 

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মতবিনিময় সভা ছিল। সেটি একটি সু-নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে ছিল। সভা শুরুর ১০ মিনিট আগে জামালপুরের কেন্দ্রীয় দুইজন নেতা যারা ঢাকায় অবস্থান করেন তারা ৩০-৪০ জনের একটি নেতাকর্মীর গ্রুপ নিয়ে এসে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তারা আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। একপর্যায়ে তারা কমিউনিটি সেন্টার ও কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন। আমার কাছে মনে হয়েছে তারা পরিকল্পিতভাবে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য এসেছিলেন। একটি মহল চেষ্টা করছে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য। আমরা সতর্ক থাকব। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করবো। আইনি প্রক্রিয়ায় না গিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন তিনি।

জামালপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত কবীর বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরএআর