কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট এক ফুট করে খোলা রাখার পরও অব্যাহত পাহাড়ি ঢলের কারণে এখনও খুব বেশি পানি কমেনি কাপ্তাই হ্রদে। এতে হ্রদ তীরবর্তী প্রায় ১৮ হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি হয়ে আছেন। জেলার লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, জুরাছড়ি উপজেলাসহ রাঙামাটি সদরের নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ১০৮ দশমিক ৫৮ মীনস সী লেভেল (এমএসএল)। ২৪ ঘণ্টা আগে একই সময়ে পানির স্তর ছিল ১০৮ দশমিক ৬২ এমএসএল। কাপ্তাই বাঁধের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, পানি ১০৬ এমএসএলে নেমে এলে তবেই নিম্নাঞ্চল থেকে পানি সরে যাবে।

এদিকে পানিবন্দি অনেকেরই অভিযোগ, কেউ তাদের ত্রাণ বা সহায়তা দিতে আসেননি। গত ১০ দিন ধরে মানবেতর জীবন কাটালেও কেউ তাদের খোঁজখবর নেননি।

শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণটিলা নোয়াদাম এলাকার বাসিন্দা আবদুস সোবাহান বলেন, গত ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আমরা পানিবন্দি জীবন কাটাচ্ছি। বৃষ্টি কমলেও হ্রদের পানি না কমায় আমাদের বাসা-বাড়ি জলমগ্ন হয়ে আছে। আমরা কোনো ত্রাণ সহায়তাও পাইনি।

একই এলাকার বাসিন্দা নুরুন নাহার বলেন, আজ অনেকদিন হলো ঘর থেকে পানি নামছে না। রান্নাঘর ডুবে থাকায় রান্নাবান্না করতে অসুবিধা হচ্ছে। কোনোরকম দুটো ভাত রান্না করে বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছি। কাপ্তাই বাঁধের পানি যদি আরও বেশি করে ছেড়ে দিত তাহলে পানি নেমে যেত, আমরাও এই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতাম।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, জেলায় পানিবন্দি মানুষের জন্য ৯২ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত ৪৭ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। বাকিগুলো পানি কমে গেলে সহায়তা করা হবে।

তিনি আরও জানান, বাঁধের পানি ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। ধীরে ধীরে পানি কমছে, দুর্ভোগ কমে যাবে।

মিশু মল্লিক/এফআরএস