উপরে বাঁ থেকে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সামছুল আলম দুদু, জাকির হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, জাকারিয়া হোসেন, আবু বক্কর সিদ্দিক/ ছবি : ঢাকা পোস্ট

জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট ও গুলি করে আহত করার অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়েছে।

মামলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক হুইপ ও জয়পুরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ ১১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ূন কবির ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন (২২) বাদী হয়ে জয়পুরহাট থানায় ওই মামলা করেন।

রাকিব হোসেন নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের হেলাল হোসেনের ছেলে। তিনি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাকিব হোসেনের মামলায় সাবেক দুই সংসদ সদস্য ছাড়া সদ্য অপসারণ হওয়া কয়েকজন মেয়র, অপসারণ হওয়া কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা, সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক রেজা, জয়পুরহাট পৌরসভার সদ্য অপসারণ হওয়া মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম হাক্কানী, জাহিদুল আলম বেনু, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কুমার সাহা, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোরশেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অশোক কুমার ঠাকুর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর, জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের ভাই আবু সাঈদ আল মাহবুব চন্দন প্রমুখ।

এজাহারে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ করা হয়। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সামছুল আলম দুদু, জাকির হোসেন ও আলমগীর নামের একজনসহ চারজনের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, পেট্রোল বোমা, ককটেল, পিস্তল নিয়ে হামলা চালায়। এসময় পিস্তল দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়লে রাকিব হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ূন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ১১৯ জনকে আসামি করে মামলা দিয়েছেন। মামলা এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশে অভিযান চালানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে এ নিয়ে জেলায় তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুটি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করা হয়েছে। শিক্ষার্থী নজিবুল সরকার বিশাল হত্যা মামলায় ১২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর অটোচালক মেহেদী হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ২১৭ জনকে।

চম্পক কুমার/এসকেডি