গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএইচ খান মঞ্জুর জমি ও জেলা বিএনপির কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরে জেলা প্রশাসনের দখলে ছিল। অবশেষে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতাকে ‘সরি’ বলে সেই জমি ফেরত দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

চলতি বছরের শুরুতে জমি দখলে নিয়ে দোকান তৈরি করে ব্যবসা শুরু করেন সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী মাহবুবুল আলম ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহসীন উদ্দীন । সেখানে জেলা প্রশাসনের ব্যানারে কালেক্টর বাজার নামে সুপার শপ খুলে ব্যবসা করেন তারা।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় অবস্থিত ৮৯ নং ঘোষেরচর মৌজার ৪৮৪৯ নং দাগের ৭ শতাংশ জামির ওপর অবস্থিত দুই তলা বিশিষ্ট ভবনে ৪০ বছর আগে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএইচ খান মঞ্জু। এরপর ২০০০ সাল থেকে ভবনটি জেলা বিএনপির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হতো। এখান থেকেই বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন এমএইচ খান মঞ্জু। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর ভবনটিতে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালান আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা। এরপর থেকেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল জমি ও ভবনটি।

এরপর ২০২০ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শাহিদা সুলতানা সরকারি জমি দখলমুক্ত ও উচ্ছেদ অভিযানের নামে জমি ও ভবনটি দখলে নেন। এরপর চলতি বছরের শুরুর দিকে জমিটি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম ও সদর উপজেলার বর্তমান ইউএনও মহসীন উদ্দীন। কালেক্টর বাজার নামে সুপার শপ খোলা হয় সেখানে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জমির মালিক এমএইচ খান মঞ্জুকে ‘সরি’ বলে দখল তুলে নেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।

আলম শেখ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, অনেক বছর ধরে এটা বিএনপির অফিস দেখছি। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর এই অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালান আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। এরপর থেকে পরিত্যক্ত পড়ে ছিল। গত কয়েক মাস ধরে দেখছি এখানে কালেক্টর বাজার নামে একটি সুপার শপ। এখন আবার দেখছি সেই বিএনপি নেতা মঞ্জুর দখলে জমি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএইচ খান মঞ্জু বলেন, আমার জমি জোরপূর্বক দখল করেছিলেন জেলা প্রশাসক ও ইউএনও। আমি সরকার পতনের আগেও বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছিলাম তখন আমাকে মামলার ভয় দেখানো হয়েছিল। তবে সরকার পতনের পর সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম আমাকে সরি বলে আমার জমি থেকে দখল তুলে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, আমাকে আর এইটার ভেতর টেনে নিয়েন না। আমার এমনিতেই বদলি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাচ্ছি না।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহসীন উদ্দীন বলেন, আমি এ বিষয়ে ফোনে কিছু বলবো না। যা বলবো সব সামনা সামনি।

তবে পরে তার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোন করলে ব্যস্ততার অযুহাত দেখিয়ে বক্তব্য দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন ইউএনও।

আরএআর