গাজীপুরে বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে চারটি কারখানার শ্রমিকরা। বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৯টার পর থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরের বড়বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। পরে শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে দিয়ে কারখানায় প্রবেশ করেন।

এদিকে সকাল ৯টার দিকে গাছা থানার হাজীর পুকুর এলাকায় ফুল ইভার বিডি লিমিটেড নামের কারখানার প্রায় ৫০০ শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশ বন্ধ থাকায় রাজধানীর উত্তরা আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফুল ইভার বিডি লিমিটেড কারখানার শ্রমিক মো. আব্দুল গণি মিয়া বলেন, গত দুই মাস যাবত আমাদের বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। গত কয়েক দিন যাবত একাধিকবার বেতনের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে সকাল থেকে মহাসড়কে নামতে বাধ্য হয়েছি।

অপরদিকে দুপুর ২টার পর গাজীপুরের কালিয়াকৈর ইবনে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন। পরে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ ছাড়া টঙ্গীতে নুভিস্তা ফার্মা লিমিটেড নামক ওষুধ উৎপাদনকারী কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এর আগে গত সোমবার বিকেলে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ১২ দফা দাবি জানান শ্রমিকরা। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ বুধবার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ঘোষণ দেয়।

কিন্তু আজ বুধবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় কাজে যোগ দিতে এসে কারখানাটি বন্ধ দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। বিক্ষুব্ধ প্রায় ২৫০ জন শ্রমিক কারখানার সামনের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশের অনুরোধে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে কারখানার সামনে ফের অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

বিক্ষুব্ধ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, আজ বুধবার আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার কথা ছিল। সকালে কারখানায় কাজে যোগ দিতে এসে কারখানা বন্ধ পাই। কারখানার নিরাপত্তাকর্মী জানান কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কারখানার কর্মকর্তারা কেউই কাজে যোগ দেননি। এটি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ না আসা পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ করবো।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, শ্রমিকরা কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। কারখানার কোনো কর্মকর্তা আজ কাজে যোগ দেননি। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।

তিনি আরও জানান, বুধবার বিকেলে অধিকাংশ কারখানায় বেতন-ভাতা দেওয়া হয়েছে।

শিহাব খান/এমজেইউ