কয়েক বছর ধরে শরীয়তপুরের জাজিরার কৃষকদের চাষাবাদে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ইতোমধ্যে জাজিরা উপজেলাটি জেলার শস্য ভাণ্ডার হিসেবেও খ্যাতি পেয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে মালচিং ও বেড পদ্ধতিতে বর্ষাকালীন বিভিন্ন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন জাজিরার কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাজিরা উপজেলায় এবার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ইতোমধ্যে ১৩৫ হেক্টর জমিতে বেগুন, শসা, করলা, লাউ, কাঁচামরিচ, ধুন্দুল সবজি আবাদ সম্পন্ন করেছেন কৃষকরা। এবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণে ফলন বেশি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে কৃষকরা আশা করছেন, আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে এসব সবজি বাজারজাত করতে পারবেন তারা।

মুলনা ইউনিয়নের মিরাশা গ্রামের ফরহাদ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাজিরার অধিকাংশ কৃষক এখন সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ফসল চাষে ঝুঁকছেন। গত ২ বছর সবজির দাম ভালো পেয়েছি। পেছনে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে সবজি আবাদ করছি। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বিঘা প্রতি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত সবজি বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।

জোবায়ের খান নামে আরেক কৃষক বলেন, আগে জমিতে পাট চাষ করতাম। এ বছর কৃষি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেছি, তারা বলেছে আমার জমি সবজি চাষের উপযোগী। তাই প্রথমবারের মতো মালচিং পদ্ধতিতে লাউ ও ধুন্দুল চাষ করেছি। আশা করছি আমি বেশ লাভবান হবো।

স্থানীয় কৃষক ফারুক মোল্লা বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ায় আমাদের চাষকৃত সবজি মাঠ থেকে তোলার দিনই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছানো যায়। দেশের বড় বড় বাজারগুলোতে সবজি বিক্রি করার ফলে আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি। তাছাড়া স্থানীয় কৃষি বিভাগ আগের তুলনায় বেশি সহযোগিতা করে। যার ফলে আমরা আগের তুলনায় কম খরচে বেশি সবজি উৎপাদন করতে পারি।

জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও জেলার সবজি ভাণ্ডার খ্যাত জাজিরা উপজেলার কৃষকরা বর্ষাকালীন সবজি আবাদ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমির উপযোগিতা অনুযায়ী তুলনামূলক উঁচু জমিতে অধিক লাভের আশায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ সম্পন্ন করেছেন তারা। আশা করা যায় কোনো ব্যত্যয় না ঘটলে আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা বাজারে সবজি তুলতে পারবেন। উপজেলার ৬৫০ হেক্টর সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বাকিটা শিগগিরই সম্পন্ন হবে। কৃষি বাণিজ্যিকীকরণের এ সময়ে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে কৃষককে অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান করতে আমরা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছি।

সাইফ রুদাদ/এফআরএস