ফেনীতে বন্যাকবলিত নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। জেলার দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলার কিছু অংশের লোকালয়ে এখনও পানি থাকলেও অন্যান্য উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বন্যার পানি নেমে গেছে। অনেক যায়গায় পানি কমলেও আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কে এখনও স্বাভাবিক হয়নি যান চলাচল। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক-পিকআপভ্যানে করে গন্তব্যে ছুটছেন মানুষজন।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী, মুন্সিরহাট, ছাগলনাইয়া ও সদর হাসপাতাল মোড় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যায় প্লাবিত ফেনী-পরশুরাম ও ফেনী-ছাগলনাইয়া আঞ্চলিক সড়কের অনেক স্থান থেকে এখনও পানি নামেনি। এতে সড়কগুলোতে ছোট যান চলাচল বন্ধ আছে। এছাড়া গ্যাস নিতে না পারায় সিএনজি অটোরিকশা ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে না। এ জন্য যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ছোটা গন্তব্যে যাতায়াতকারীরা।

ট্রাকে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরশুরাম থেকে ফেনীর উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ আবু তাহের। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তায় ট্রাক-ট্রলি ছাড়া আর কোনো যানবাহন নেই। জরুরি প্রয়োজনে শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি। ভাড়া সিএনজি অটোরিকশার চেয়ে কিছুটা বেশি নিচ্ছে। ঝুঁকি থাকলেও নিরুপায় হয়ে যেতে হচ্ছে।

ফেনী সদর হাসপাতাল মোড় এলাকায় নজরুল ইসলাম নামে পিকআপভ্যানের এক যাত্রী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পরিবারের কোনো খোঁজ পাইনি। ঢাকা থেকে এলেও তিনদিন ফেনী শহর থেকে পানির জন্য বাড়ি যেতে পারিনি। সিএনজি বা অন্য কোনো পরিবহন না থাকায় ট্রাক-পিকআপভ্যানে করেই যেতে হচ্ছে।

রাজ্জাক নামে এক ট্রাকচালক বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ও সড়কের অনেক স্থানে পানি থাকায় রাস্তায় সিএনজি অটোরিকশা, ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। ভাড়া সিএনজি অটোরিকশার চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশি নিচ্ছি। আমরা বড় গাড়িতে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।

সোহাগ নামে পরশুরামের ব্যাটারিচালিত এক অটোরিকশার চালক বলেন, এক সপ্তাহ ধরে এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। গাড়ির চার্জ দিতে না পারায় ঘরে বসে দিন পার করছি। একদিকে বন্যা আবার অন্যদিকে আয় রোজগার বন্ধ। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি।

প্রসঙ্গত, টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে দেড় মাসের ব্যবধানে তৃতীয় দফায় আটদিন ধরে বন্যার পানিতে ফেনীর জনপদ। এতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন। 

তারেক চৌধুরী/এফআরএস