প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে ঢুকে তাকে চেয়ার থেকে নামাতে ও পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করাতে জোরাজুরি করছেন একদল শিক্ষার্থী। এক পর্যায়ে শিক্ষিকা জোরাজুরি করা এক ছাত্রীকে চড় মারেন। তবুও শিক্ষার্থীরা তাকে চেয়ার থেকে নামানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়।

এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। 

জানা যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনের পদত্যাগের দাবিতে রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মনাববন্ধন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিদ্যালয়ে থাকা প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনের রুমে ঢুকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। এসবের পরও পদত্যাগ করেননি ওই শিক্ষিকা।

বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনের বিরুদ্ধে ভুয়া ভাউচার, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে উত্তোলনকৃত অর্থ আত্মসাৎ, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ নেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা তার রুমে গেলে তার সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে পদত্যাগ না করে তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন।

প্রধান শিক্ষিকার পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বক্তব্য দেন সরিষাবাড়ি উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল কবির তালুকদার। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তিনি একজন রুক্ষ এ উদ্ভট প্রকৃতির মানুষ। তার আচরণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও কর্মচারী কেউ তার প্রতি সন্তুষ্ট নয়। তিনি বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য বিতর্কিত। প্রধান শিক্ষিকার জন্য বিদ্যালয়টি আজ কুলষিত।

শিক্ষার্থীরা জানায়, ওয়াজেদা পারভীন অসৎ পন্থায় প্রধান শিক্ষিকা হয়েছেন। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাইতে এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ফী নেওেয়া হয়। প্রতিবাদ করতে গেলে নানান প্রকার হুমকি দেওয়া হয়। স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও সেটি ব্যবহার না করে তাদের থেকে ল্যাব ফী নেন তিনি। নামমাত্র ম্যানেজিং কমিটি করে তার মন মতো স্কুল পরিচালনা করা। প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিদ্যালয়টির অবস্থা বিভিন্ন দিক থেকে অবনতির দিকে যাচ্ছে বলেও জানায় তারা। 

প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনের সঙ্গে গতকাল সকালে আমার কথা হয়। আমি তাকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছিলাম। তবে আমার কাছে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

আরকে