ভারতের ত্রিপুরার পাহাড়ি ঢলে সালদা নদীর পানি বৃদ্ধিতে কসবায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে কসবার পানি ধীরগতিতে কমতে শুরু করেছে। এই এলাকার এখনো বেশকয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। সেক্ষেত্রে প্রশাসন ও সরকারি-বেসরকারি সংগঠন-প্রতিষ্ঠানগুলো ত্রাণ নিয়ে ছুটে যাচ্ছে বন্যার্তদের কাছে।

বন্যার এই সংকটকালীন মুহূর্তকে পুঁজি হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে কসবার বন্যাকবলিত এলাকার নৌকাওয়ালারা। ত্রাণ দিতে আসা লোকদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত অর্থ। সেক্ষেত্রে প্রশাসনকেও তোয়াক্কা করছেন না তারা। এতে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কৈখলা, খাদলা, মাদলা, পুটিয়া, শ্যামপুর এলাকার মতো দূরবর্তী গ্রামগুলোতে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন খুবই কম সংখ্যক মানুষ। তবে সেখানেই প্রয়োজন খাবার ও বিশুদ্ধ পানির।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কসবার বায়েক থেকে নৌকা যোগে সেসব এলাকায় অন্যান্য দিনগুলোর ভাড়া প্রতিজনে ৫০-৬০ টাকা। আর পুরো নৌকা (রিজার্ভ) ভাড়া করতে লাগত দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। সেখানে সংকটাপন্ন অবস্থায় বন্যাকে পুঁজি করে ত্রাণ নিয়ে আগতদের কাছ থেকে দাম ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছেন। অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় দূরবর্তী সেসব এলাকায় না গিয়ে কাছাকাছি ত্রাণ দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা লোকজন। এতে যাদের জরুরি প্রয়োজন তারা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, বায়েক থেকে একটু দূরে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যাব। নৌকার ভাড়া চেয়েছে ১৫ হাজার টাকা। কথা কাটাকাটি করে ১২ হাজার টাকায় রাজি করিয়েছি। তবে একটি মানবতার কাজ করতে গিয়ে সামান্য দূরত্বে যেতে যদি নৌকা ভাড়া এত টাকা গুণতে হয় তাহলে বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাবে কম। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ওই শিক্ষার্থী।

একাধিক সংগঠনের সদস্যরা জানান, বন্যাকে পুঁজি করছে কসবার নৌকাওয়ালারা ভাড়া বেশি আদায় করছেন। ২০ হাজার টাকা ত্রাণ দিতে গেলে যদি নৌকা ভাড়া যদি আট থেকে ১০ হাজার টাকা লাগে—সেটা অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।

বায়েক গ্রামের নৌকার মাঝি সুবহান, শাহজাহান, তসলিমের সঙ্গে ভাড়া বেশি রাখার ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে এ ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

কসবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার মোক্তার বলেন, দু-একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। নৌকাওয়ালারা ভাড়া বেশি আদায় করছেন। বিষয়টি পর্যবেক্ষণে ঘটে গিয়ে নৌকাওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলছি এবং যারা ভাড়া বেশি হাঁকাচ্ছেন তাদেরকে সতর্ক করেছি।

মাজহারুল করিম অভি/এএমকে