রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তুহিনুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের পর নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, তার ছেলে মিতুল হাকিম ও বালিয়াকান্দি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি আদালতে মামলা হয়েছে।

রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তুহিনুর রহমান বাদি হয়ে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি আমলি আদালতে মামলাটি করেছেন।

মামলার বাদি মো. তুহিনুর রহমান (৩৯) বালিয়াকান্দি উপজেলার নাড়ুয়া ইউনিয়নের বিলধামু এলাকার আ. মালেকের ছেলে। সে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বারের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. কামরুল আলম।

মামলার আসামিরা হলেন—সাবেক রেলমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জিল্লুল হাকিম, তৎকালীন বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সামা মো. ইকবাল হায়াত, রেলমন্ত্রীর আপন চাচাতো ভাই বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হাকিম সাধন, বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নায়েব আলী, নাছির উদ্দীন, কলকলিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, নাড়ুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কালাম ও রেলমন্ত্রীর বড় ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিতুল হাকিম।

মামলার বাদী তুহিনুর রহমান বলেন, ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি আমাকে অপহরণ করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন আসামিরা। চাঁদা আদায়ের জন্য নির্যাতনসহ খুনের চেষ্টাও করেন তারা। আসামিরা আমার পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমার বাবা তাদের পাঁচ লাখ টাকা দেন। পরবর্তীতে আমার বাবাকে আরও পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে তারা বাধ্য করেন। এরপর তারা কুযুক্তি করে আমাকে বালিয়াকান্দি থানায় পেন্ডিং মামলায় চালান দেন। পরবর্তীতে আমি অসুস্থ হলে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আমাকে চিকিৎসা করাতে হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন। এখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি না আমি। দেশের পরিবেশ ভালো হওয়ায় এ মামলাটি দায়ের করেছি আমি।

রাজবাড়ী জেলা বারের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড.কামরুল আলম বলেন, আদালতের বিচারক মৌসুমী সাহা মামলাটি আমলে নিয়ে সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমসহ ১০ জনের নামে মামলাটি বালিয়াকান্দি থানার ওসিকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ছুটিতে রয়েছি, তবে মামলার বিষয়ে শুনেছি। মামলার কপি এখনো থানায় এসে পৌঁছায়নি। মামলার কপি আসলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/রাজবাড়ী