টানা বর্ষণে লক্ষ্মীপুরে সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দি। এরমধ্যে কোথাও হাঁটু পরিমাণ, আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি জমে আছে। গত দুই দিন ধরে নোয়াখালীর বন্যার পানির চাপে লক্ষ্মীপুরেও বিভিন্ন স্থানে এখন বন্যা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিনে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ৬৫ জনকে সাপে কামড় দিয়েছে। এ ছাড়া নোয়াখালীতেও গত দুই দিনে ৩৫ জনকে সাপে কামড় দিয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেন, আমাদের হাসপাতালে গত কয়েকদিনে ৬৩ জন সাপে কামাড়ানো রোগী এসেছেন। এরমধ্যে গত দুই দিনে ১০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন রোগীকে বিষাক্ত সাপে কামড় দিয়েছে। 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, গত দুই দিনে আমরা ৩৫ জন সাপে কামড়ের রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি। তবে মনে হচ্ছে, এর মধ্যে কোনো বিষাক্ত সাপ ছিল না। সাপে কামড়ানো রোগীর সেবা নিশ্চিতের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ইনজেকশন রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের ১টি পৌরসভা ও ৪৫টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দি। এতদিন বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে ছিল। গত দুই দিন ধরে নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়ছে। এতে সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, মান্দারী, বাঙ্গাখাঁ, উত্তর জয়পুর ইউনিয়নসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রায় চার ফুট পানিতে ডুবে আছে জনপদ। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা-হাজীগঞ্জ বেড়ির পশ্চিম পাশে ভুলুয়া নদীতে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ২৫ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে বিস্তীর্ণ জনপদ। রামগতি-কমলনগর ও নোয়াখালীর আন্ডারচর ও চরমটুয়া গ্রামের তিন লক্ষাধিক মানুষ এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জলাবদ্ধতার এ পানি কোথাও সরছে না।

শনিবার দিনব্যাপী লক্ষ্মীপুরের আকাশে সূর্যের হাসি থাকলেও মানুষের চেহারা ছিল বিষাদে ভরা। পানিবন্দি এসব এলাকায় গর্তে থাকা সাপ বের হয়ে এসেছে। এতে বাসাবাড়ি ও মাঠেঘাটে কাজ করার সময় সাপগুলো মানুষদের কামড়াচ্ছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এএমকে