সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মো. আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২৬ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে সাভার মডেল থানায় মামলাটি করেন নিহত সৈকতের বাবা নজরুল ইসলাম।

নিহত সৈকত বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার উত্তর দিঘলকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। সে সাভার পৌর এলাকার শাহীবাগ মহল্লায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতো এবং ঢাকার কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা (৭৬), বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (৭২), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (৭৫), সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত (৫০), সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান (৭২), সাবেক সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব (৫৫), সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল গণি (৭২), ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা (৬৫), তেঁতুলজোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর (৫০), বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫), বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মণ্ডল (৪৭), সাভার সদর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল রানা (৪২), ভাকুর্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন (৫৫), আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন (৪৮), মাজহারুল ইসলাম রুবেল (৩৭), সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের এপিএস শামীম আহমেদ (৫০),সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক (৩৫), রাজু আহমেদ (৩৫), মোবারক হোসেন খান পলক (২৮), মো. আব্দুল কুদ্দুস (৩৬), কামরুল হাসান শাহীন (৪৮), মেহেদী হাসান তুষার (৪৫), সায়েম মোল্লা (৪৭), আব্দুর রব (৪৪), রাজু মোল্লা (৩২), জাকির হোসেন ওরফে মামা জাকির (৩৮), মো. ইসরাফিল, রায়হান ইসলাম রিপন (২৮), মাসুম দেওয়ান (২৫), হাসান আলী (৪৮), হৃদয় সরকার, জীবন সরকার, আহমেদ ফয়সাল নাঈম তূর্য্য (৩০), পাভেল ওরফে তোতলা পাভেল (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৫০), প্রবাল (৪৫), মো. আব্বাস আলী (৬০), মো. হাবিজ উদ্দিন (৫৫), হান্নান মিয়া (৪৫), মো. রাজা মিয়া (৪০), মো. গিয়াস উদ্দিন (৫৫), ফজলুল হক ওরফে ফজা (৫৫), মো. আব্দুর রব (৪০), শরিফুল ইসলাম শরীফ, রুবায়েত ইসলাম শান্ত, মো. মমতাজুল হক জনি , আমজাদ হোসেন (৬০), সোহাগ (৩০), রমজান মিয়া (৩২), রুবেল (৩৫), উজ্জ্বল (৪০), আব্দুল মতিন (৫৫), মহিদুল ইসলাম রুবেল ওরফে গিট্টু রুবেল, আসিফ (২৫), মোহাম্মাদ হোসেন (৫৩), মো. রমজান আলী (৫২), সাইফুল ইসলাম (৪২), কিরণ (৪৫), ইউনুছ পারভেজ (৪৫), সিদ্দিক (৫৭), হামিদ (৫৫), মামুন (৪২), লতিফ (১৯), নুরুল আমীন রানা ওরফে ব্যস্ত রানা (৫২), মুকুল (৫২), সেলিম আহমেদ ওরফে জুট সেলিম (৫০), ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী সেলিম মিয়া (৫০), রফিকসহ (৩৫) অজ্ঞাত  আরও ২৫০-৩০০ জন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারের থানা রোড়ে মুক্তিমোড় এলাকার আসে সৈকত। সেখানে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেয় সে। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও প্ররোক্ষ হুকুমে এবং প্ররোচনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাদের ওপরে হামলা করে। এতে সৈকতের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক সৈকতকে মৃত ঘোষণা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১২৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

লোটন আচার্য্য/এফআরএস