নরসিংদীর রায়পুরায় চোর সন্দেহে ইকবাল হোসেন (৪০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে পলাশতলী দারুল উলুম আলিয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে স্থানীয়রা হাতে নাতে ধরে গণপিটুনি দিলে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহত ইকবাল হোসেন পলাশতলী ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে। তিনি আগে চুরি কাজে লিপ্ত থাকলেও বর্তমানে ব্যবসা করে বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ইকবাল ও তার আরও দুই সঙ্গী একই ইউনিয়নের সাহেব নগর গ্রামের কাউসারের বাড়িতে প্রবেশ করে। সেখানে তারা ঘরে ঢুকেই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে বাড়িতে থাকা আলমারি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণলংকার নিয়ে যাওয়ার সময় কাউসারের স্ত্রী তাদের দেখে ফেলে। পরে সেখানে তাদের মধ্যে থেকে একজন তার মুখ চেপে ধরে এবং অন্য দুজন সেগুলো লুট করে। এমতাবস্থায় ইকবাল ও তার সাথে থাকা দুজন দরজা খুলে দৌড় দিলে কাউসারের স্ত্রী চিৎকার করে। সেসময় ইকবালের সঙ্গে থাকা দুই সহযোগী পালিয়ে যেতে পারলেও স্থানীয়রা পলাশতলী দারুল উলুম আলিয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে ইকবালকে ধরে ফেলে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এমতাবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাত আনুমানিক ১০টায় ইকবালকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের স্ত্রী স্বর্ণা বলেন, আমার স্বামী কৃষি কাজের পাশাপাশি কলা ও সবজি বিক্রি করতেন। আগে একসময় সে চুরি করলেও এখন সে একেবারে ভালো হয়ে গেছে। আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে বিচার চাইব, আমার স্বামী যদি অন্যায় করে থাকে, তার বিচার করবা। আর আমার স্বামী যদি অন্যায় না করে থাকে তারও তুমি বিচার করবা। কুত্তার মতো আমার স্বামীকে তারা মেরেছে। প্রাণটা পর্যন্ত তারা তাকে ভিক্ষা দেয়নি।

পলাশতলী ১নং ওয়ার্ড সাবেক মেম্বার জুয়েল মোল্লা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, চুরি করার অপরাধে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপারেশন প্রবীর কুমার ঘোষ বলেন, গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট প্রাপ্তির পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তন্ময় সাহা/আরকে