নোয়াখালীতে ডুবেছে বাড়িঘর-রাস্তাঘাট, আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই মানুষের
টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীসহ নয়টি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এদিকে জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। এছাড়া পৌরসভার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এতে সাধারণ মানুষজন ছুটছে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।
জানা গেছে, জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে প্রশাসন। তাই নিজেদের গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র ঠাঁই নিয়েছে বানভাসিরা। তবে সরকারি সহায়তা না চেয়ে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার উদ্যোগ চান এসব মানুষজন।
বিজ্ঞাপন
বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসনে আরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্যার কারণে পানি বাড়ছেই। ঘরে হাঁটু পানি। দাঁড়ানোর জায়গা নেই। ঘরের ভিতরে আর থাকার মতো না। পরিবারের সদস্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি। তাই স্কুলে এসে আশ্রয় নিয়েছি।
আরও পড়ুন
বেলায়েত হোসেন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ঘরে হাঁটু পানি। রান্নাঘরেও পানি। পানির কারণে রান্নাও করতে পারিনি। আশপাশের নালায় জমে থাকা ময়লা আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতদিন খাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। কাজ করে পরিষ্কার করা হয়েছে টক্কার পুল। আজ হাজীপুর ও রসুলপুর এর বন্যা দুর্গত এলাকা ও আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। পানির অবস্থা খুব খারাপ। সকল ইউনিয়ন এ পানি উঠছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় সকল মানবিক মানুষকে অসহায়ের পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা বৃষ্টির ফলে জেলার বেশির ভাগ এলাকাই এখন প্লাবিত হয়ে আছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছি। এ ছাড়া পানিবন্দি মানুষের জন্য শুকনা খাবার ও কিছু নগদ অর্থও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিজ নিজ এলাকার লোকজনের পাশে দাঁড়াতে বলেছি। সার্বিক বিষয়টি এরই মধ্যে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
হাসিব আল আমিন/পিএইচ