পিরোজপুর নেছারাবাদ ঘুষ বাণিজ্য বন্ধে ভূমি অফিসে গিয়ে হাজির হলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলা সদরের ভূমি অফিসে আকস্মিকভাবে হাজির হন তারা।

এ সময় ছাত্ররা ভূমি অফিসের কর্মকতা-কর্মচারীদের ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি রোধে সচেতন করেন। এছাড়া জনগণের সঠিক সেবা নিশ্চিত করে দুর্নীতিমুক্ত জাতি উপহার দিতে ভূমি অফিসের কর্মকতা কর্মচারীদের প্রতি দাবি জানান।

সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও দালালে ভরে গেছে সমগ্র দেশ। ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্টার অফিস, বিআরটিএ অফিস, ভিসা অফিস, এলজিইডি অফিসসহ একাধিক দপ্তরে ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা প্রদান করা হয় না। জনগণ অভ্যস্ত হয়ে গেছে ঘুষ দিতে কারণ তারা জানে ঘুষ ছাড়া কাজ আদায় করে নেয়া সম্ভব নয়। এই রেওয়াজকে ভেঙে চুরমার করে দেওয়াই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। ভূমি অফিসে জনগণের সেবা সমূহের মধ্যে ই-নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, নামজারি খতিয়ান, ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড, আর এস খতিয়ান, মৌজা ম্যাপ ও রেন্ট সার্টিফিকেট মামলার ক্ষেত্রে অনেক ঘুষ দিয়ে কাজ আদায় করে নিতে হয় এ বিষয়ে আমরা ভূমি অফিসের কর্মকতা কর্মচারীদের সতর্ক করেছি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেছারাবাদ উপজেলার সমন্বয়ক নওশাদ মাহমুদ বলেন, ভূমি অফিস একটা সময়ে ছিল ঘুষ-দুর্নীতির রসের হাড়ি। কিন্তু যেহেতু বর্তমানে দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন পাশাপাশি সরকারি সকল দপ্তরের সংস্কারের কাজ চলছে তাই আমরা আজকে এই বার্তা দিতে এসেছি যে, কোন ধরনের অনৈতিকতা ছাত্রসমাজ মেনে নিবে না। প্রশাসনিক পর্যায়ে যারা আছে তাদের অবশ্যই অন্যায়ের বিরূদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। কোনোভাবেই যেন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি না হয়।

আরেক সমন্বয়ক ও ছাত্র প্রতিনিধি নিয়াজ মাহমুদ বলেন, প্রত্যেক মানুষকেই ভুমি অফিসে তাদের প্রয়োজনে যেতে হয়। ইতঃপূর্বে নানা অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্ম্যে সাধারণ জনগনের নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিলো সকল সরকারি সেবায়। জনগণের এ হাহাকার সুশিক্ষিত শ্রেণির নাগরিকদেরও করতো বাকরুদ্ধ। আমরা চাই ঘুষ, দুর্নীতি, দলীয় প্রভাবমুক্ত সরকারি সেবা। আরও চাই জনগণ যাতে নিজে সচেতন হয়েই এসব চাটুকারদের ব্যাপারে স্বপ্রণোদিত হয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা সদরের ভূমি অফিসের তহসিলদার (ভূমি সহকারী কর্মকর্তা) বরুণ কুমার কর বলেন, প্রতিটি দপ্তরে কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ছাত্রছাত্রীদের মনিটরিংকে সাধুবাদ জানাই। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে প্রয়োজনে তারা অফিসে এসে আমাদেরকে সহযোগিতা করবে এবং সরকারি পরিপত্রে উল্লেখিত টাকার অতিরিক্ত ফি না নিতে। আমরাও তাদেরকে জানিয়েছি অতিরিক্ত ফি কখনো গ্রহণ করব না।ছাত্র-ছাত্রীদের এই মহৎ উদ্যোগকে আমার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাগত জানিয়েছি।

আরকে