কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া পঞ্চগড় আন্তনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ২৭ দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার শিডিউল মেনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। ট্রেন চালু হওয়ায় খুশি যাত্রীরা।

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে গত ১৮ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধাপে ধাপে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) স্টেশনটির বুকিং সহকারী মো.ফারুক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস আন্তনগর ট্রেনটি। আর রাতে যায় একতা এক্সপ্রেস। এ দুই ট্রেনে যাত্রী ছিলেন ৭১৪ জন। আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত তিনটি ট্রেন গেছে। এ সময়ের মধ্যে যাত্রী ছিলেন ১৫০ জন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, ঢাকামুখী উত্তরাঞ্চলে রয়েছে ৯টি আন্তনগর ট্রেন। ট্রেনগুলো হচ্ছে একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি, রংপুর, চিলাহাটি ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস। এদের মধ্যে পঞ্চগড় স্টেশনে চলে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, দোলনচাঁপা, দ্রুতযান, বাংলাবান্ধা ও একতা এক্সপ্রেস। এসব ট্রেনগুলো এ স্টেশন থেকে ছাড়ে সকাল ৬টায় দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস (পঞ্চগড়-সাপাহাড়), সকাল ৮টা ১০ মিনিটে দ্রুতযান, সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও রাত ৯টা ১০ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস।

জানা যায়, চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন উত্তরের এ জেলার হাজার হাজার যাত্রী। রেল ভ্রমণ অনেকের পছন্দ হলেও বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়েই দূরপাল্লার বাসে যাতায়াত করতে হয়েছিল যাত্রীদের। এতে করে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে যাত্রীদের।

একেএম ইবনে মাসুদ নামে এক যাত্রী জানান, দীর্ঘ দিন পর ট্রেন চালু হওয়ায় ভালো লাগছে। এখন ট্রেনেই যাতায়াত করতে পারব। প্রায় এক মাস যাতায়াত করতে হয়েছে বাসে। একদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আরেকদিকে সময় অপচয়। নিয়মিত চলাচল হলে আমরা এসব ভোগান্তি থেকে থেকে মুক্তি পাব।

তবে ট্রেন নিয়ে অভিযোগ রয়েছে হুমায়ুন কবীর নামে এক যাত্রীর। তার অভিযোগ, ট্রেন কিংবা বাস যেটাই হোক, পঞ্চগড় থেকে ঢাকা অনেক দূরের পথ। এ দীর্ঘ পথে ভ্রমণে সময় লাগে ১১/১২ ঘণ্টা। সড়কে যানজট থাকলে বেশি সময় লাগে। ট্রেনে অনেকটা সুবিধা হয়। তবে বর্তমানে আমাদের পঞ্চগড়ে ট্রেনগুলোর সার্ভিসগুলো আগের মতো ভালো নয়। কয়েক মাস ধরে আমাদের রুটের ট্রেনগুলোতে পুরাতন ও ভাঙাচোরা বগি সংযুক্ত করায় অনেক সমস্যা ও ভোগান্তি হচ্ছে। জার্নিতে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিক থেকে আমরা বৈষম্যের শিকার। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।

পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ের স্টেশনের স্টেশন মাস্টার  মাসুদ পারভেজ জানান, সব প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার যথাসময় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে রেল চলাচল শুরু হয়েছে।

এসকে দোয়েল/এমএ