সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় শিক্ষার্থীদের অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতন কুমার রায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অশ্লীল (প্যান্টের চেইন খুলে দেখানোর চেষ্টা) ভঙ্গি করেন এই কর্মকর্তা। এ সময় পাশে থাকা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক তাকে শান্ত করেন। 

গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। পরে শিক্ষার্থীরা সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানান। 

ভিডিওতে দেখা যায়- শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের অনিয়মগুলো তত্ত্বাবধায়কের দেখা উচিত বলে উল্লেখ করেন। এ সময় কথার একপর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক উত্তেজিত হয়ে গালি দেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তত্ত্বাবধায়ককে ভাষা খারাপ করেন কেন বললে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে হুমকি দেন ও চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ভিডিও করা ক্যামেরার দিকে হয়ে- ভিডিও কর বলে প্যান্টের চেইন খুলতে থাকেন। এ সময় তার পাশে থাকা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক তাকে আটকান। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকালও শিক্ষার্থীরা এসে রোগীদের খাবারসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে বলেন ও তাদের সঙ্গে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়। এরপর তারা আজকে এসে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং হাসপাতাল পরিষ্কার করতে চায়। আমরাও তাতে সম্মতি জানাই। এরপর শিক্ষার্থীদের আরেকটি গ্রুপ এসে আরেকটি বিষয় নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক উত্তেজিত হয়ে এ কাজ করেন। ঘটনাটি দুঃখজনক। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। 

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতন কুমার রায়, সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. রাম পদ রায় ও জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। এমনকি মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও উত্তর মেলেনি। 

তবে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লিটুস লরেন্স চিরান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে শুনেছি এবং শিক্ষার্থীরা বিকেলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যারের সঙ্গে বসেছিলেন বলেও জেনেছি। তবে এরপরে কী হয়েছে বা তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে আমি অবগত নই।

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর