বিজিবির নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ উদ্দিন বলেছেন, ‘অনেক জায়গায় ছবি বা ভিডিও দেখে আপনাদের মন খারাপ হতে পারে। কিন্তু আসলে এর অনেক কিছুই সত্য না। আপনারা নিজ নিজ এলাকার ভূমিপুত্র। হিন্দু সম্প্রদায় বলে মন খারাপ করবেন না। আমরাসহ সাধারণ মানুষও আপনাদের সঙ্গে চলে আসছে। এটা বরং আগের থেকে আরও বেশি সম্পর্ক গাঢ় হয়েছে। 

সোমবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধলাহার ভানাইকুশলিয়া গোবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তিনি এসব কথা বলেন। জেলার সীমান্তবর্তী হিন্দু ধর্মালম্বীদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে মতবিনিময় করে তাদের আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সাহস যোগাচ্ছে বিজিবি। 

লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ উদ্দিন বলেন, কাকিমা, দাদিমা উনাদের হাতের নাড়ু, চিড়া, এগুলো খেয়ে বড় হইছি। পূজা-পার্বণে আনন্দ না করলে আমাদের আনন্দ পূর্ণ হতো না। এই ছোটবেলার ইতিহাস ভুলি কি করে। আমাদের অধিকাংশ শিক্ষক হিন্দু। এখনো বাড়িতে গেলে তাদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করি। উনাদের জন্য আজ এই পর্যন্ত আসা। সেই আমি বলবো, এই সম্পর্ক অত্যন্ত সুন্দর, সম্প্রীতির সম্পর্ক। এটাই আমাদের সম্পদ এবং শক্তি। কোনো দুষ্কৃতকারী এই সুযোগে যেন কিছু না করতে পারে সেটি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেজন্য আমরা বিজিবি সদস্যরা আগের থেকে এখন ভালোভাবে আছি এবং থাকবো।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন জায়গায় এক ধরনের আশঙ্কা বিরাজ করছে। সেজন্য আমরা জয়পুরহাটের সীমান্তবর্তী এলাকার হিন্দু ধর্মালম্বীদের সঙ্গে সম্প্রীতির সভা করছি। এই সম্প্রীতির সভায় উনারা মন খুলে কথা বলেছেন। উনাদের ভালো মন্দ আমাদের জানিয়েছেন। বিজিবি সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে আছে। তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। উনাদের নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন সেটি করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। যে কোনো দুষ্টু চক্র আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে, তাদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি করেছি। তাদের আমরা প্রতিহত করব।

সম্প্রীতির এই সভায় ভানাইকুশলিয়া ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হিন্দু ধর্মালম্বী ৩০০ পরিবার সমবেত হয়েছিল। এ সময় পত্নীতলা ১৪ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক শাহ আলম, স্থানীয় ধলাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হোসেনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

চম্পক কুমার/আরএআর