বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সাধারণ ছুটি, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ও সর্বশেষ অসহযোগ আন্দোলনের এক দফায় সরকার পতনের দিন থেকে দুইদিনসহ বেশ কয়েকদিন বন্ধ ছিল বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। চলমান অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে গত বুধবার থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে স্থলবন্দরটি। তবে শ্রমিকদের মধ্যে এখনও আতঙ্ক রয়ে গেছে। ফলে অনেকে কর্মস্থলে যোগ দেননি। 

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার পতনের দিন থেকে সরকারি ছুটিসহ দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকা সুরক্ষিত রাখতে সোম-মঙ্গলবার দুইদিন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। তবে ইমিগ্রেশন যাত্রীপারাপার স্বাভাবিক ছিল। দেশের পরিস্থিতি এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ী স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে।

স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, বন্দর দিয়ে ভুটান ও ভারতের পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করলেও পাথরের সাইটগুলোতে আগের মতো শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা যায়নি। 

ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দেখা গেছে, আগের থেকে যাত্রীপারাপার কমে গেছে এ ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে। এর মধ্যে ভারতীয় ভিসা দেওয়া বন্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে চলমান অস্থিরতার মধ্যে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও কোনো দুষ্কৃতকারী যেন অবৈধ পথে  ভারত প্রবেশ করতে না পারে সে কারণে বিজিবি সীমান্তে কড়া নজরদারিসহ রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। বাড়তি সতর্কতার নেওয়ার সাথে দু’দেশের সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে টহল। সীমান্তে রেড অ্যালাট জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক।

বাংলাবান্ধা শ্রমিক সংগঠনের নেতা আক্তার হোসেন জানান, আমাদের এ স্থলবন্দরে জেলার বাইরেও বেশ কয়েকটি জেলা থেকে মানুষ কাজ করে থাকেন। তাদের মধ্যে অনেক হিন্দুধর্মাবলম্বীর। গত সোমবার সরকার পতনের পরপরই বিভিন্ন জায়গায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। এ কারণে অনেক শ্রমিক বাড়িতে চলে গেছেন। আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেও অনেক শ্রমিক কাজে আসেননি। মনে হচ্ছে এখনও তাদের আতঙ্ক কাটেনি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলে আগের অবস্থায় ফিরে যাব আমরা।

বাংলাবান্ধা কাস্টম সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত সোমবার ও মঙ্গলবার বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। দুইদিন পর  আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বন্দরের কাজও চলছে স্বাভাবিকভাবে। 

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অমৃত অধিকারী বলেন, চলমান ঘটনায় আমাদের ইমিগ্রেশনে কোনো সমস্যা নেই। যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকার পতন ও উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে গত সোম-মঙ্গলবার দুইদিন আমাদের এ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বুধবার বন্দরে ১৪৫টি ও বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ২৫০টির বেশি পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। আশা করছি সামনে আর এ ধরনের সমস্যা হবে না। আমদানি-রপ্তানিতে প্রাণবন্ত থাকবে স্থলবন্দরটি।

এসকে দোয়েল/এনএফ