বাগেরহাট শহরের পুলিশ লাইন্স স্কুলের সামনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছে ৭ বছরের শিশু আরাফ মাহিন। ফুচকা খাওয়ার কথা বলে মায়ের কাছ থেকে ৩০ টাকা নিয়ে একটি বাঁশি কিনে দুদিন ধরে সড়কে দায়িত্ব পালন করছে সে। ট্রাফিক পুলিশের অবর্তমানে সড়কে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য পুলিশ লাইন্স স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফের এই প্রচেষ্টা।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে শহরের শহরের পুরাতন পুলিশ লাইন্সের সামনে গিয়ে দেখা যায়, হাতে বাঁশি নিয়ে রিকশা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকক চালকদের সুশৃঙ্খখলভাবে সড়কে চলাচলের আহ্বান করছে আরাফ। আরাফ হাতে থাকা একটি দিকনির্দেশক লাঠি দিয়ে যানবাহনগুলোকে সারিবদ্ধভাবে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিচ্ছে। সড়কের চলাচলরত যানবাহনগুলো তার নির্দেশ পালন করছে। আরাফের এমন উদ্যোগে খুশি হয়েছেন তার মা লাইলি আঞ্জুমানসহ পথচারীরা।

আরাফের মা লাইলি আঞ্জুমান বলে, আরাফের উদ্যোগে আমি খুব খুশি হয়েছি। ফুচকা খাওয়ার জন্য ৩০ টাকা নিয়েছিল, পরে জানলাম সে বাঁশি কিনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। ওকে যখন নিতে আসছি তখন বলে, আম্মু আমাকে একটা ঘণ্টা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দাও, চার ঘণ্টা বই পড়বো। ওর কথার পরে আর বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করিনি। গতকাল থেকে ও কাজ করছে, আমি দূর থেকে ওর সাথে আছি। আরাফকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি আমি।

প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরাফ বলেন,  এই জায়গায় সব সময় পুলিশ আঙ্কেলরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতেন। কিন্তু কয়েকদিন পুলিশরা দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই মাঝে মাঝেই বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। এজন্য শৃঙ্খলা ফেরাতে আমি নিজে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। অটো ও রিকশাচালক আঙ্কেলরাও আমার কথা শুনছে, খুবই ভালো লাগছে। 

এছাড়া শিক্ষার্থীদের সাথে সড়কের ময়লা পরিষ্কার করতেও দেখা যায় শিশু আরাফকে। আরাফ বাগেরহাট শহরের সরুই এলাকার ইমরুল হাসানের ছেলে। 

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে বাগেরহাট শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, ট্রাফিক মোড়, দশানী, সাধনার মোড়, শালতলা ও ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিএনসিসি সরকারি পিসি কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজ ইউনিটের সদস্য, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। 

শেখ আবু তালেব/আরএআর