জাজিরা থানার ওসির নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা
শরীয়তপুরের জাজিরা থানায় সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুর অনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে জাজিরা থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে চলমান পুলিশের কর্মবিরতির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন জাজিরা থানার পুলিশ সদস্যরা। কর্মসূচির সংবাদ প্রচারের জন্য স্থানীয় প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সদস্য অন্যান্য সংবাদকর্মীরা সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। একপর্যায়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগের দালাল বলে তাদের ওপর হামলার হুকুম দেন পুলিশ সদস্যদের। এরপর পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলায় দৈনিক আমার সংবাদের স্থানীয় প্রতিনিধি হিমেল আহমেদ অপি গুরুতর আহত হয়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় দৈনিক যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইমরান হোসাইনকে হত্যার হুমকি দেন ওসি। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাংবাদিকরা সেখান থেকে জীবন বাঁচিয়ে নিরাপদে চলে যান। গুরুতর আহত হিমেল আহমেদ অপিকে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। অন্যদিকে ইমরানসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা নিরাপদে অন্যত্র চলে যান। বর্তমানে জাজিরার সাংবাদিকরা আতঙ্কে রয়েছেন।
এ ঘটনার সময় সাংবাদিক হিমেল আহমেদ অপি ফেসবুকে এক ভিডিওতে রক্তাক্ত অবস্থায় বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাংবাদিকরা পূর্ণ সমর্থন দিয়ে সংবাদ প্রচারণাসহ আন্দোলনকারীদের সহযোগিতা করায় আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করেছে।
হামলায় আহত সাংবাদিক ইমরান হোসাইন বলেন, আমরা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে ছিলাম। তখন শুনতে পারি জাজিরা থানা পুলিশ বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে নিউজ করার জন্য থানায় যাই। গিয়ে যানতে পারি ওসি আমাদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য ও গালাগাল করছেন। বিষয়টি আমি ওসিকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন, পাশাপাশি তার নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় আমাদের চার-পাঁচজন সাংবাদিক আহত হন। আমি এই হামলার বিচার চাই।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী শরীয়তপুরের জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মইনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাজিরাতে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, এমন সংবাদ পেয়ে আমি জাজিরা থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও ছিলেন। সংবাদকর্মীকের মধ্যে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফারুক হোসেন ছিলেন। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পুলিশের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। আশা করছি জাতির বিবেক সংবাদকর্মীরা এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখবেন।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যতদূর জেনেছি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়ে থাকলেও আমরা জেলার সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ কোনো অন্যায় করে থাকলে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমি সংবাদকর্মী ও পুলিশ উভয়কে নিরাপত্তা প্রদানের অনুরোধ করছি।
সাইফ রুদাদ/আরএআর