কুমিল্লায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নেই পুলিশ সদস্যরা। চলমান এই পরিস্থিতিতে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে সারাদেশের মতো কুমিল্লায়ও নিরলসভাবে কাজ করছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে সড়কে নেমে বুধবারও সারাদিন কুমিল্লা নগরীর সবগুলো সড়কে কাজ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
বিজ্ঞাপন
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরীর গুরত্বপূর্ণ সড়কসমূহে শিক্ষার্থীদের সরব অবস্থান। সবার হাতে ছোট ছোট লাঠি। সেসব লাঠি দিয়ে সিগন্যালের কাজ করছেন তারা। পুরুষ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের কর্মচঞ্চলতাও লক্ষ্য করা গেছে চোখে পড়ার মতো। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কুমিল্লার প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসব কাজে অংশ নিয়েছেন।
নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে কথা হয় বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (বায়োস্ট) শিক্ষার্থী আহনাফের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এক দফা দাবি বাস্তবায়নের পর পুলিশ সরে যাওয়ায় সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে ভেবে মানুষের দুর্ভোগ কমানোর জন্য সড়কে আছি আমরা। আমরা এটাকে খুব এনজয় (উপভোগ) করছি।
আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুধু ট্রাফিক ব্যবস্থাই নয়, আমরা সকালে বাজারে বাজারে গিয়ে মনিটরিং করেছি। কোনো ব্যবসায়ী যেন কারও কাছ থেকে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে না পারে সেজন্য সকলকে সচেতন করেছি। মানুষের কষ্ট লাঘবে আমরা আছি, সবসময় থাকব।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, একদফা দাবি বাস্তবায়নের পর আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি। রাষ্ট্র মেরামত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বিশ্রাম নেই। আমাদের একদল শিক্ষার্থী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে, একদল ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে এবং একদল বাজার মনিটরিংয়ের কাজে আছি।
আব্দুর রহমান নামের এক অটোরিকশা চালক ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থীরা খুব ভালো কাজ করছেন। তারা না থাকলে তীব্র যানজটে পড়তে হতো। তারা সুন্দরভাবে সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করছেন।
কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির মাসউদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা সড়কে কাজ করছেন। তাদের উৎসাহিত করা উচিত সবার। এই ছেলে-মেয়েগুলো আগামীর বাংলাদেশ। তাদের কাজটাকে অনেক সাধুবাদ জানাচ্ছি।
আরিফ আজগর/এএমকে