শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পরপরই বাড়ি এবং এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন যশোরের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও নেতাকর্মীরা। সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া সোমবার শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর  অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস ও ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটায়। 

মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর-১ (শার্শা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের কোনো খোঁজ মিলছে না। বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিনের নিকটতম কয়েকজন অনুসারীর কাছ থেকে জানা যায়, দেশের চলমান অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর গত কয়েকদিন আগে তিনি এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। পরে আর এলাকায় ফেরেননি।

এদিকে খোঁজ মিলছে না বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি কবে এলাকায় এসেছিলেন তাও কেউ জানেন না। এদিকে সোমবার বিকেলে তার বাসভবনে হামলা ও পোস্টার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। 

যশোর-৪ (বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুক হক বাবুল এলাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তবে বাড়িতে নাকি অন্য কোথাও সেটি তার নিকটতম কেউই বলতে পারেন না। 

যশোর-৫ (মনিরমাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াকুব আলী যশোরে আছেন বলে অনেকে বলছে, আবার কেউ বলছে তিনি আপাতত ঢাকায় অবস্থান করছেন। 

যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম কোথায় আছেন তা তার নিকটতম কেউ জানেন না। একাধিক সূত্রের মাধ্যমে তার স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও তার খোঁজ জানেন না বলে জানান। 

এদিকে যশোরের বহুল আলোচিত রাজনৈতিক নেতা যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত যশোরে অবস্থান করছিলেন। এরপর তার বাসভবনে আগুন ও অফিসে ভাঙচুর শুরু হলে তিনি যশোরের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

অপরদিকে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের অবস্থান কোনো মাধ্যম দিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত তার বাসভবনে হামলার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। 

যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের খোঁজ মিলছে না সোমবার থেকেই। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরের পরে কিছু দুর্বৃত্ত শহরের রেলরোডস্থ তার মদের বার, ও নাথ কম্পিউটারে হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা মোহিত নাথের মদের বার থেকে মদ লুট করে প্রকাশ্যে মদ্যপান করে এবং শহরজুড়ে মাতলামি করে। একইসঙ্গে তার নাথ কম্পিউটারে হামলা করে সব কম্পিউটার ও ল্যাপটাপ লুট করে নিয়ে যায়। 

অপরদিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলামের বাড়িতও হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সদর উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান বিপুল সোমবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন বল জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রপতির প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ্যান্টনি দাস অপু/এএমকে