শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশত্যাগের খবরে মাহবুবউল আলম হানিফ ও কামারুল আরেফিনের বিলাসবহুল বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার (৫ আগস্ট) দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সেখানে থাকা জিনিসপত্র নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া জেলা ও থানা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যালয়, কুষ্টিয়া মডেল থানা, ওসির বাসভবন ও ভাস্কর্যে ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিক্ষুব্ধ জনতা বলেন, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক এমপি কামারুল আরেফিন অনিয়ম দুর্নীতির ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেশ-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তারা দুজন মিলে কুষ্টিয়ায় টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসায়, অবৈধভাবে পদ্মা-গড়াইয়ের বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করত। তারা অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছেন সন্ত্রাসী বাহিনীর এই গডফাদাররা। আমরা তাদের বিচার চাই। তাদের সকল অপরাধ সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মানুষ ঘরছাড়া, অনেক মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। তাই দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

সোমবার দিনব্যাপী ও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কুষ্টিয়া সদরে এই সহিংসতার চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষুব্ধ জনতার ঢল নামে। আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়া জনতা এ সময় কুষ্টিয়া মডেল থানা, শহরের পিটিআই রোডের হানিফের বাড়ির মালামাল নেওয়া শুরু করে দুর্বৃত্তরা। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত সময়ে তারা ফ্রিজ, সোফা, এসি, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল নিতে থাকে। এ  সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। একইভাবে কুষ্টিয়া মডেল থানা থেকে অস্ত্র, মোটরসাইকেল, গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, ফ্রিজ, সোফা, এসি, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিতে দেখা যায় দুর্বৃত্তদের।

এ ছাড়া মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে এমপির মিরপুরের আলিশান বাসভবনে ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এ ছাড়াও কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভবনসহ একাধিক স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ কর্মকর্তা ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা কেউ কল রিসিভ করেননি। 

রাজু আহমেদ/এএমকে