বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘোষিত অসহযোগ কর্মসূচিতে সরকার ঘোষিত কারফিউর মধ্যেই বরিশালে বিআরটিসি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর আমতলা এলাকার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ও বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

পাশাপাশি সেখানে থাকা সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের ব্যানার-পোস্টার সাঁটানো একটি অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। কার্যালয় দুটির আসবাবপত্র সড়কে এনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে একদল পুলিশ সদস্য ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে চৌমাথা থেকে আমতলার মোড়ের দিকে যায়। ওই সময় পুলিশ সদস্যদের টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। তবে পুলিশ সদস্যরা চলে যাওয়ার পর মহাসড়কটিতে আবারও বিক্ষেভকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পরপরই হেলমেটধারী কিছু লোক এসে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনের সড়কের ওপর থাকা বিআরটিসি বাসটিতে আগুন দেয়। পাশাপাশি কাউন্সিলর কার্যালয়টি ভাঙচুর করে। আর রাস্তার অপর পাশে থাকা আওয়ামী লীগের ব্যানার-পোষ্টার সাঁটানো একটি অফিসে ভাঙচুর চালায়। পরে কার্যালয় দুটির ভাঙাচোরা আসবাবপত্র সড়কে এনে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং সরকার পতনের দাবিতে স্লোগান দেয়।

প্রতক্ষ্যদর্শী আরাফাত হোসেন বলেন, যারা পুলিশ যাওয়ার পর ওই এলাকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কেউ স্থানীয় বলে মনে হয়নি। এমনকি ছাত্র বলেও মনে হয়নি। আর সড়কে বিক্ষোভকারীদের মাঝে আশপাশের এলাকার তরুণরা থাকলেও তারা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেননি। বরং স্থানীয়রা বাসটিতে আগুন দেওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসকে তা নেভানোর জন্য জানায়। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের গাড়ি নিয়ে আসলেও তা ফেরত পাঠায় হেলমেটধারীরা।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল সদর স্টেশনের স্টেশন অফিসার রবিউল আলামিন বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে যায়। তবে বিক্ষোভকারীরা আগুন না নিভিয়ে চলে যাওয়ার জন্য বলে। নতুবা আমাদের ওপর হামলার হুমকি দেয়। আমরা নিরস্ত্র মানুষ তাই জানমালের নিরাপত্তায় বাধ্য হয়ে সেখান থেকে চলে আসি।

অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের অবস্থানের কারণে বেলা ১১টা থেকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নগরের অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সন্ধ্যার আগেও নগরের চৌমাথা এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সড়কের ওপর আগুন ধরিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে বরিশালের দক্ষিণ অংশসহ দক্ষিণের ৬ জেলার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর