সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে রংপুরের রাজপথে মানুষের ঢল নেমেছে। রোববার (৪ আগস্ট) সিটি বাজার এলাকার কাছাকাছি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুজন নিহত হয়েছেন।  

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্দার আব্দুল জলিল ও মিজানুর রহমান মিজান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, দুজনের মরদেহ হাতে পেয়েছেন। তবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাহাজ কোম্পানি মোড় এলাকায় অবস্থান নেওয়া সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে টাউন হল অভিমুখে রওনা দেন। সিটি বাজার এলাকার কাছাকাছি  আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে।

রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে রংপুর টাউন হল সংলগ্ন সড়কে জামায়েত হতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে চারপাশ। এতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেন। তাদের এ জমায়েতে সরকারবিরোধী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে।

আন্দোলনকারীরা এ সময় প্রধান সড়ক অবরোধ করে সেখানে বিক্ষোভ করেন।

আতিক উন নবী নামে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলেন, আমার অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। তার সঙ্গে সংহতি জানাতে একজন অভিভাবক হিসেবে আমার এই অবস্থান। একের পর এক শিশু, কিশোর, যুবক, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা করা এই সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছে। অবিলম্বে ছাত্র-জনতার এক দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগের দাবি জানান তিনি। 

এদিকে অসহযোগ আন্দোলনের কারণে নগরীর দোকানপাট, শপিং মলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। সীমিত আকারে রিকশা, অটোরিকশা চলাচল করছে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সহিংসতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না।

এই খবর লেখা পর্যন্ত (দুপুর ১টা) পুরো রংপুর মহানগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেছে। তবে বড় ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। 

অন্যদিকে রংপুর মহানগর এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশে খবর পাওয়া গেছে। বদরগঞ্জ উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বাসভবনে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, অনেক স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে আগুন দিয়েছে সরকারবিরোধী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে