কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নারী শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় হল শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৩ আগস্ট) শনিবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্যাডে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। রোববার বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম ‘সুনীতি-শান্তি’ হল রাখা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শেখ হাসিনা’ হলের সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে হলের নাম পরিবর্তন করে ‘সুনীতি-শান্তি’ রাখা হলো। ৩ আগস্ট হতে হলের পূর্ব নাম ‘শেখ হাসিনা’ অকার্যকর বলে বিবেচিত হবে এবং নতুন নাম ‘সুনীতি-শান্তি’ কার্যকর হবে। এ প্রসঙ্গে হল প্রশাসনকে অনতিবিলম্বে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করার আহ্বান জানানো হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সুনীতি চৌধুরী এবং শান্তি ঘোষ নামের দুই মহীয়সী নারী তৎকালীন ভারতবর্ষে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে ব্রিটিশ শাসকের অন্যায়, অবিচার এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। সেই সময়ে কুমিল্লার ফয়জুন্নেসা স্কুল পড়ুয়া এই দুই নারী ব্রিটিশরাজ্যের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অথচ তাদের সাহসিকতার কথা কখনও সামনে আসেনি। তাদের প্রতি সম্মানার্থে হলের নামকরণ ‘সুনীতি-শান্তি’ হল করা হলো।

বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৪ তম আবর্তন ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার মোহনা বলেন, ‘আন্দোলনের পর থেকেই মনে হচ্ছিল যার বিরুদ্ধে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি তার নামের হলেই আমাদের আবাসিক হল। সর্বশেষ যখন স্বৈরাচার সরকার হাসিনার পতনের দাবি উঠল তখনো মনে হলো এই নামের হলে থাকতে আমাদের বিবেকে আটকাবে। বুটেক্স, চুয়েটের মতো অনেকেই তাদের হলগুলোর নাম পরিবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। সেই অনুপ্রেরণা থেকে আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার অস্তিত্বের ঠিকানায় স্বৈরাচারের নামেরও জায়গা নেই।

বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মেহের নিগার বলেন, আমি আমার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বর্তমান মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি। হলের নাম পরিবর্তনের বিষয়টিও চলমান পরিস্থিতির প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ। তাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই, তবে এই বিষয়টি পুরোপুরি হল কর্তৃপক্ষের ওপর নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে আমাদের যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ীই আমরা কাজ করব।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এফএফএম আব্দুল মঈন বলেন, এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি বা দাবির বিষয়ে আমি অবগত নই। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যা করবে আমরাও তাই করব। যদি শিক্ষার্থীরা হলে গিয়ে ওঠে তখন আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। 

আরিফ আজগর/আরকে