খালে ৫ ড্রেজার বসিয়ে কৃষি জমি ভরাটের মহোৎসব চলছে
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বাঘিয়া বাজার এলাকায় খালের মধ্যে পাঁচটি আনলোড ড্রেজার বসিয়ে কৃষি জমি ভরাটের মহোৎসব চলছে। টঙ্গীবাড়ী উপজেলা প্রশাসন দুইবার অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও ড্রেজার পাইপ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেও আবারও প্রকাশ্যে এই সমস্ত কৃষি জমি ভরাট বাণিজ্য চালাচ্ছেন দুর্বৃত্তরা।
এর নেপথ্যে রয়েছেন আশা ও ভুট্ট নামের দুই ভাই। তারা টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দরজার পার গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া, সদর উপজেলার লক্ষ্মীদেবী গ্রামের মাইনুদ্দিন ও বেহের কান্দি গ্রামের শওকত দেওয়ানের দুইটি ড্রেজার বসানো হয়েছে। এর মধ্যে আশা ও ভুট্টু সারা বছরই কৃষি জমি ভরাট বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাঘিয়া বাজার স্টিল ব্রিজের পূর্ব পাশে দুইটি ও পশ্চিম পাশে একটি আনলোড ড্রেজার চলছে। এছাড়া, পুরা বাজার ব্রিজ সংলগ্ন খালে ও েএর পাশের রজতরেখা নদীতে চলছে অপর দুইটি আনলোড ড্রেজার। এ সমস্ত আনলোড ডেজারের বালু নিয়ে খালের মধ্যে অবস্থান করছে কমপক্ষে ১৫টি বাল্কহেড।
এর মধ্যে আশার ব্যক্তিগত মালিকানায় দুইটি ও ভাগে একটি ড্রেজার রয়েছে। অপর একটি ড্রেজার তার ভাই ভুট্টোর ও আরেকটি মাইনুদ্দিনের। আশার সঙ্গে ভাগে একটি ড্রেজার চালাচ্ছেন শওকত দেওয়ান।
এ সমস্ত ড্রেজার দিয়ে মাটি আনলোড করতে গিয়ে বাঘিয়া বাজারের সামনের রাস্তার ওপরের তিনটি স্থানে সৃষ্টি হয়েছে স্পিড বেকার। এতে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
কিছুদিন আগে টঙ্গীবাড়ি উপজেলা প্রশাসন দুই দফা অভিযান চালিয়ে এ সমস্ত ডেজারের মধ্যে আশা ও ভুট্টর ড্রেজারকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও পাইপ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। কিন্তু তারপরেও এ সমস্ত আনলোড ড্রেজার দিয়ে মাটি তুলে কৃষি জমি ভরাট চলছে।
আশার দাবি, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তিনি মাটি কেটে কৃষি জমি ভরাট করছেন। ওই স্থানের দুইটি ড্রেজার একাই ও একটি ড্রেজার ভাগে চালাচ্ছেন বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি ড্রেজার চালাতে পারমিশন এনেছি। পারমিশন এনেই কৃষি জমি ভরাট করছি।
কার কাছ থেকে পারমিশন এনেছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আনিনি আমার ভাই এনেছে।
এ ব্যাপারে বাঘিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে এসিল্যান্ড সাহেব ড্রেজার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এর আগেও আরেকটি ড্রেজার মালিককে জরিমানা করেন তিনি। পরে ইউএনও স্যার অভিযান চালিয়ে ওই স্থানের সবগুলো ড্রেজারের পাইপ গুঁড়িয়ে দেন। তারপরেও তারা ড্রেজার চালাচ্ছে। আমি বিষয়টি পুনরায় আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ফারজানা ববি মিতু বলেন, আমি এর আগেও ওই খালে গিয়ে এক ব্যক্তিকে ড্রেজার চালানোর অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। ইউএনও স্যার পুনরায় অভিযান চালিয়ে ওই স্থানের সব ড্রেজার-পাইপ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। তারপরেও যদি ড্রেজার চালায়, তাহলে আমরা অভিযান চালিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কেউ তাদের অনুমতি দেয়নি। অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
ব.ম শামীম/কেএ