কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বর্তমান সরকার কৃষি প্রণোদনায় বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ডিএপি সারের বাজারমূল্য ছিল ৯০ টাকা কেজি। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডিএপি সারের মূল্য কমিয়ে মাত্র ২৮ টাকায় নিয়ে এসেছে। পটাশিয়ামের দাম ৬০ টাকা থেকে নামিয়ে ১৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে এমওপি সারের মূল্য ছিল ৮২ টাকা। এ সারের দাম কমিয়ে ২২ টাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। কৃষকদের স্বার্থে সরকার ব্যাপক পরিমাণ প্রণোদনা দিয়ে এমন সুবিধা দিচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়লেও সরকারের সদিচ্ছায় বিভিন্ন সারের দাম কমিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (০৬ মে) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চিনিয়াতলা গ্রামে বোরো মৌসুমে ব্রি-৮১ জাতের ধান কাটা উদ্বোধন শেষে কৃষক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল যখন শ্রমিকরা ধান কাটতে চাইতেন না। কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও কৃষিবান্ধব সিদ্ধান্তে ধান কাটা শ্রমিক ও কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এমনকি বর্তমান সরকারের সময়ে ধানের উৎপাদন চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রতি বছর জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে নানা কারণে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমছে। রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবও। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফসলের নতুন জাত ও চাষাবাদের প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। ফলে জনসংখ্যা বাড়লেও, খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব হচ্ছে। দেশের বিজ্ঞানীরা ধানের বিভিন্ন উন্নতমানের জাত উৎপাদন করছেন।

চিনিয়াতলা গ্রামে বোরো মৌসুমে ব্রি-৮১ জাতের ধান কাটা উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ব্রি-৮১ জাতটি, ব্রি-২৮ জাতের মতই জনপ্রিয়। কৃষকরা নতুন এই জাতটি চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উচ্চফলনশীল এ জাত চাষের মাধ্যমে ধানের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় এটি আশানুরূপ ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়; সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিভিন্ন প্রণোদনা ও গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ এবং গবেষণাগার তৈরি, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রদান এবং বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে গবেষণার ওপর গুরুত্ব প্রদান অব্যাহত থাকবে সরকারের। যাতে ভবিষ্যতে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব হয়। ব্রি-৮১ ধানের গবেষণা ও চাষাবাদের জন্য বিজ্ঞানী ও কৃষকদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান কৃষিমন্ত্রী। 

বোরো মৌসুমে ব্রি-৮১ জাতের ধান কাটার উদ্বোধন ও কৃষক সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জণ দাশ, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আসাদুল্লাহ ও ব্রি-র মহাপরিচালক ড. শাজাহান কবীর প্রমুখ।

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এএম