রাজশাহীতে স্বল্পমাত্রায় বৃষ্টিপাত ও ডোবা, খালে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চাষিদের। পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় বাড়ছে উৎপাদন খরচ। এ কারণে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। 

রাজশাহী কৃষি অফিস জানিয়েছে, গত বছর পানির অভাবে পাট জাগ দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার চাষ কমেছে ২ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। 

জানা গেছে, এ বছর রাজশাহীতে পাট চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। 

কৃষি অফিস বলছে, গত বছর এই সময় বৃষ্টিপাত কম হয়েছিল। ফলে পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে চাষীদের। এ বছরও পাটের বীজ বপনের সময় বৃষ্টিপাত হয়নি। তাই অনেকে পাটের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ করেছেন। এ কারণে এবার বেড়েছে ভুট্টার চাষ। গত বছর ১১ হাজার ১০০ হেক্টর ভুট্টা জমিতে চাষ হয়েছিল ভুট্টা। এবার চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। ফলে এ বছর ভুট্টার চাষ বেড়েছে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। 

পবা উপজেলার পারিলা গ্রামের পাট চাষী ইমরান আলী জানান, গত বছর ৬ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। জাগ দিতে সমস্যা হওয়ার কারণে এবার ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এবারও আবহাওয়া তেমন ভালো না। বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। এ কারণে পাটের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেনি তেমন। বর্তমানে ডোবা বা খালে পানির অভাবের কারণে চাষীরা পাট কাটছে কম। তবে যেসব এলাকায় ডোবায় পানি আছে তারা পাট কেটে জাগ দিচ্ছেন।

পবার আরেক পাট চাষী আব্দুর রহিম মন্ডল জানান, রাজশাহীতে গত বছর সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হয়েছিল। এতে চাষিরা কিছুটা আশা দেখেছিলেন। তাই অনেকে এবছরও পাট চাষ করেছেন। কিন্তু এবার পাট জাগ দিতে পানির সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকে পাট কেটে জমিতে ফেলে রেখেছেন, বৃষ্টির অপেক্ষা করছেন। 

গত বছর পাট চাষ করে পানির অভাবে জাগ দিতে বেগ পেতে হয়েছিল পবার দারুশা এলাকার করিম আলীকে। তিনি বলেন, গত বছর ডোবায় পানি না থাকায় পাট কেটে জমিতে ফেলে রাখতে হয়েছে। অনেক পাট নষ্ট হয়েছে। তাই এ বছর পাট ১ বিঘা জমিতে পাট ও আড়াই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। 

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে সালমা বলেন, রাজশাহীতে পাটের চাষ কমছে। তবে বেড়েছে ভুট্টার চাষ। এ বছর পাট জাগ দিতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে বৃষ্টিপাতের ফলে চাষিরা ভালোভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন। গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ বছর ১০০ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

শাহিনুল আশিক/এনটি