চলতি বছর বন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার কৃষকের ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকার ফসলের। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, সদর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চলতি বন্যায় জেলায় ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। 

ক্ষতিগ্রস্ত কাজিপুর উপজেলার তেকানী গ্রামের সুরুজ আলী বলেন, তিন বিঘা জমিতে পটল আবাদ করেছিলাম। বন্যার পানিতে তলিয়ে সব জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক আলতাব শেখ বলেন, দুই বিঘা জমিতে মিষ্টি লাউ, সিম, কুমড়া এবং দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি না হলেও লাউ, কুমড়ার চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার। 

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। এরপর দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। বর্তমানে (৩০ জুলাই) যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে ১২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে যমুনায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা না থাকলেও আগামী মাসে আবারও যমুনার পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে আগামী মাসের মাঝামাঝি গিয়ে যমুনার পানি আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে তথনও বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও খুব ভারী বন্যার আশংকা নেই। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্যায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা ও সবজিসহ ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার ফসিল।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কৃষকদের সহায়তার কথাও বলা হয়েছে। সহায়তা পেলে কৃষকরা কিছুটা উপকৃত হবেন। 

শুভ কুমার ঘোষ/জেডএস