কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মার্কেটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওই অরাজকতা চলাকালে বারবার পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. চাঁন মিয়া। 

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডের ফজর আলী গার্ডেন সিটি মার্কেটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা এসব কথা জানান। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কাছে তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। 

দুই দফায় হামলার কথা উল্লেখ করে চাঁন মিয়া বলেন, গত ২০ জুলাই স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতা রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এক দল ডাকাত ও সন্ত্রাসী বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে আমার মার্কেটের সিসি ক্যামেরাসহ গেট ভাঙচুর করে। আমাদের বাধার কারণে তখন তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শতাধিক লোক নিয়ে মার্কেটের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তারা। তারা এলজির শোরুমসহ মার্কেটে থাকা সব প্রতিষ্ঠানের মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা ১৭টি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করে। দুই ঘণ্টার তাণ্ডবে সব মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার মালামাল লুট ও ক্ষতি করে তারা। 

পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ডাকাতি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল ক), সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত)-কে ফোনে এবং মোবাইলে মেসেজে অবগত করলেও ঘটনাস্থলে প্রশাসনের কেউ আসেনি। এমনকি এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে চার ডাকাতকে আটকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানায়, কিন্তু ডাকাতদের কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখার পরও প্রশাসনের কেউ না আসায় ডাকাতদের অভিভাবকের জিম্মায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। 

মামলা নিতে অস্বীকৃতির কথা উল্লেখ করে চাঁন মিয়া বলেন, পরদিন (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে কোনো এক অদৃশ্য কারণে তারা মামলা গ্রহণ করবে না বলে আমাকে সাফ জানিয়ে দেন। এমনকি ওসি বলেন, ‘আমাদেরই জান বাঁচে না, মামলা কীভাবে নেব।’ আমি একজন ব্যবসায়ী। নিয়মিত ভ্যাট ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করি, কিন্তু প্রশাসনের কাছে আমরা কোনো নিরাপত্তা পাই না। মহামান্য হাইকোর্ট থেকে প্রশাসনের প্রতি আমার জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও তারা বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা দেয়নি। 

তবে ব্যবসায়ী চাঁন মিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, উনি (চাঁন মিয়া) আমার কাছে আসেন নাই। উনাকে আমি মামলা করতে বলেছিলাম। আর ‘আমাদেরই জান বাঁচে না, মামলা কীভাবে নেব’ এ রকম কোনো কথা তাকে বলিনি। 

শিপন সিকদার/আরএআর