টেকনাফের সেন্টমার্টিনে বোট ডুবির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে কোস্ট গার্ড। মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০০-৩৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ জুলাই) টেকনাফ মডেল থানায় কোস্ট গার্ডদের সেন্টমার্টিন স্টেশন কমান্ডার লে. কর্নেল অনিক মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

রোববার (২৮জুলাই) রাত ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনি। 

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনে কোস্ট গার্ড ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলায় ২৯ জনকে এজাহার নামীয় আসামি এবং ৩০০-৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল বাতেনকে। তিনি পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ জুলাই সেন্টমার্টিনের ট্রলার ডুবির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোস্ট গার্ড ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডারসহ ৫ জন আহত হন। বেশকিছু সরকারি মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ঘটনায় ৯নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাড়ার ফয়সালকে ১নং আসামি করে সেন্টমার্টিন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ কে ২নং আসামি এবং সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমানকে ৩নং আসামি করে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০০/৩৫০ জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা দায়ের করে কোস্ট গার্ড।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে টেকনাফ থেকে নিত্যপণ্য ও যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের গোলারচর মোহনায় এফবি সাদ্দাম নামে ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৬ জন উদ্ধার হয়। পানিতে হারিয়ে যান নুর মোহাম্মদ সৈকত নামে একজন কলেজ ছাত্র। তাকে উদ্ধার অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হন মো. ফাহাদ ও মো. ঈসমাইল। তাদের ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি নিয়ে দ্বীপবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় কোস্ট গার্ড বাদী হয়ে দ্বীপের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ট্রলার ডুবির পর কোস্ট গার্ডকে অবহিত করা হলেও তারা উদ্ধার তৎপরতায় সাগরে নামেনি। দ্বীপবাসী সার্ভিস বোট ও ফিশিং ট্রলারে উদ্ধারে যায়। তারা ফিরে এলে নিহতদের ছবি তোলা নিয়ে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সঙ্গে দ্বীপবাসীর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এসময় ফাঁকা গুলি চালায় কোস্ট গার্ড। এ ঘটনায় হানিফ নামে একজন গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হন। শুনলাম এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে কোস্ট গার্ড জানায়, সমুদ্র উত্তাল থাকায় বোটডুবির পর কোস্ট গার্ডের অনুমতি নিয়ে দ্বীপবাসী সার্ভিস বোট ও ফিশিং ট্রলারে উদ্ধারে যায়। তারা ফিরে এলে তথ্য সংরক্ষণের জন্য নিহতদের ছবি তোলা নিয়ে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সঙ্গে দ্বীপবাসীর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে কিছু স্থানীয় বাসিন্দা কোস্ট গার্ড স্টেশনে হামলা চালালে কোস্ট গার্ড সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় হানিফ নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।

সাইদুল ফরহাদ/এসকেডি