কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালীন মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত গুলিতে গুরুতর আহত হন ইমতিয়াজ হোসেন জাবির (২২)। গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) ঢাকার বনশ্রী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর ২৬ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

২৬ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিনই দিবাগত রাত ১১টার দিকে গ্রামের বাড়িতে মরদেহ আনা হয়। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

নিহত ইমতিয়াজ হোসেন জাবির যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের দেউলি গ্রামের নওশের আলীর ছেলে। তিনি ঢাকা সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাবা নওশের আলী পেশায় একজন মুরগীর ফার্ম ব্যবসায়ী। নওশের আলীর দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে জাবির বড়। জাবিরের বোন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। 

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে নিহত জাবিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মধ্যে একটি কক্ষে ছেলে হারানো শোকে কাতর হয়ে পড়ে আছেন মা শিরিনা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে মাঝে মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি। অপরিদকে জাবিরের বাবা নওশের আলী অসুস্থ হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। 

জাবিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি নিহতের স্বজনরা। গোটা এলাকায় শোক আর আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা শওকত হোসেন বলেন, আমরা এলাকাবাসী শুধু এটুকুই জানি যে সে নামাজ পড়ে বের হচ্ছিল, তখন বাইরে গণ্ডগোলের মধ্যে পড়ে সে গুলিবিদ্ধ হয়।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান বলেন, জাবির অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিল। ও বাড়িতে আসতো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতো। কখনো বাজে সঙ্গ ওর ছিল না। গত শুক্রবার জানতে পারি যে সে নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় তার পায়ে গুলি লাগে। ওই সময় বাইরে গোলাগুলি চলছিল। জাবিরের মৃত্যুতে আমরা গোটা এলাকাবাসী শোকাহত।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে