ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের সন্তান আবু বকর ছিদ্দিক শিবলু। রাজধানীতে একটি কোম্পানিতে সহকারী হিসাবরক্ষক পদে চাকরির সুবাদে প্রায় চার বছর ধরে উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি।

গত ২১ জুলাই (রোববার) কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার জেরে আবদুল্লাহপুর রেলগেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শিবলু। এতে তার দীর্ঘদিনের সাজানো সংসার মুহূর্তেই যেন এলোমেলো হয়ে যায়। তারপর থেকে চারদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে বুধবার মৃত্যু হয় শিবলুর। তার এমন মৃত্যুতে স্বজন ও প্রতিবেশীরা শোকে স্তব্ধ।

শিবলু ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁনপুর এলাকার ওছি উদ্দিন ভূঞা বাড়ির মৃত আবুল হাসেমের ছোট ছেলে। পরিবারে তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তর রিমা, ফারহান ছিদ্দিক (৮) এবং নুসাইবা ছিদ্দিক (১০ মাস) নামে দুই সন্তান রয়েছে। শিবলুর বড় ভাই আবদুল হাকিম বাবলু স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

আবদুল হাকিম বাবলু বলেন, ঘটনার দিন ছেলে ফারহানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন শিবলু। আবদুল্লাহপুর রেলগেট এলাকায় বসে ছিলেন তারা দুজন। হঠাৎই শুরু হয় গোলযোগ। পরে ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফেরার জন্য উঠে দাঁড়ালে আচমকা শিবলুর মাথার বাম পাশে গুলি লাগে।

তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আশপাশের লোকজন ভাইকে (শিবলু) অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠান। অবস্থার আরও অবনতি হলে মঙ্গলবার আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে শিবলুর মরদেহ নিয়ে দাগনভূঞার গ্রামের বাড়ি ফেরেন স্বজনরা। ওইদিন রাতেই তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবদীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিবলুর লাশ গ্রামে আনার পরে এক শোকাবহ পরিবেশের তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বাড়ির সামনে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। নিহতের মরদেহ নিজ গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

তারেক চৌধুরী/টিএম