বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় তিন দিনে ৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল পুলিশ। এর মধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে ৭৩ জন এবং জেলার ১০ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (২৪ জুলাই) তথ্য নিশ্চিত করেছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার প্রলয় রায় জানান, মেট্রোপলিটনের আওতায় ৪টি থানায় মোট ৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি মামলার বাদী পুলিশ। অপর একটি মামলা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি। মামলায় এখন পর্যন্ত ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্য নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

জেলা পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, নাশকতায় লিপ্ত ও চেষ্টায় জড়িত ২৫ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলার বাকেরগঞ্জ ও বানারীপাড়াতে দুটি নাশকতাবিরোধী মামলা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বরিশালের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন এই বিবেচনায় কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী দু একদিনের মধ্যে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

এদিকে শহর ঘুরে দেখা গেছে কারফিউ চলাকালীন মোড়ে মোড়ে যৌথ বাহিনীর টহল। সড়কে যাতায়াতকারী লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

উল্লেখ্য, বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলনে ১৭ জুলাই নথুল্লাবাদ, চৌমাথা এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়। ওই দিন টানা ১০ ঘণ্টা চেষ্টা করেও সড়কের দখল নিতে পারেনি পুলিশ। এরপরের দিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়ে সড়ক ছাড়া করতে না পেরে পিছু হটে পুলিশ। এই দুই ঘটনায় নথুল্লাবাদে একটি পুলিশ বক্স, চৌমাথায় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। এরপরের দিন বিকেলে চৌমাথা এলাকায় সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। 

বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহর মহড়ায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারসহ ৭ জনকে গুরুত্বর জখম করে। এর মধ্যে কয়েকজন বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে