শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, সোয়াটের ন্যাক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত এবং এক দফা দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর ২টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে তারা দুই ঘণ্টা অবস্থান করে বিকেল ৪টার দিকে চলে যান। অপরদিকে অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। সেসময় পুলিশের সঙ্গে সাঁজোয়া যান দেখা যায়। প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ-বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘হৈ হৈ রৈ রৈ ছাত্রলীগ গেল কই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবির বলেন, মনে অনেক কষ্ট নিয়ে আজকে রাজপথে দাঁড়িয়েছি আমরা। আমাদের ভাই-বোনদের মৃত্যু বৃথা হতে কখনোই দেব না। প্রয়োজন হলে আমরাও রাজপথে জীবন দেব। গতকালও আমাদের ওপর পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। আমরা সবাই রাজপথে জীবন দিতে চাই তবুও আমাদের আন্দোলনের যে দাবি রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করে ছাড়ব।

সেখানে থাকা রুয়েট শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান বলেন, সরকার জেনেশুনেই আমাদের সঙ্গে নাটক শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তা আমাদের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। আমাদের যৌক্তিক দাবিকে সরকার ভিন্নখাতে নিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবির জন্য রক্ত দিচ্ছে। আমাদের কয়েকজন ভাই ইতোমধ্যে মারা গেছেন। তাদের রক্তের বিনিময়ে হলেও ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়ন হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মতিহার থানা পুলিশের ডিসি মধুসূদন রায় বলেন, ‘আপনাদের কেন্দ্রের যে নেতাকর্মী আছে তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণের মধ্যেই আলোচনায় বসবে। আপনাদের যে যৌক্তিক দাবি আছে সেগুলো পূরণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আপনাদের অনুরোধ করছি আপনারা কেউ উত্তেজিত হবেন না।’

এ সময় প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

জুবায়ের জিসান/এমজেইউ