রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি।

এদিকে বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে রংপুর নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি-জামায়াতের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান জানান, নগরীর তাজহাট থানায় এসআই ভূপতি রায় বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশকে জখম, অবরুদ্ধ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সায়ফুজ্জামান ফারুকীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ সব কিছুই তদন্ত করে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। এতে যদি পুলিশ সদস্য দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহত আবু সাঈদ

অন্যদিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহত ও সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বেরোবি ক্যাম্পাসের সামনে পার্ক মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় সংঘর্ষের সম্মুখে থাকা আবু সাঈদ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। তিনি বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।

এদিকে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ আবাসিক হলে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পুরো নগরীতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ