রেলগেট এলাকার একটি দোকানে বিস্কুট-পানি খেয়েছেন গৃহবধূ শাহনাজ বেগম (২৫)। এরপর চার বছরের ছেলে সিফাতকে কোলে নিয়ে রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটা শুরু করেন। এ সময় একটি ট্রেন ঢুকে পড়ে। তবে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ তিনি দেবেন, সেটি হয়তো প্রত্যক্ষদর্শীরা কল্পনাও করেননি। কোলে সন্তান নিয়েই ওই গৃহবধূ ঝাঁপ দিয়েছেন চলন্ত ট্রেনের নিচে। এতে ঘটনাস্থলেই মা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহনাজ বেগম দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের মনিরুজ্জামান মিঠুর স্ত্রী। নিহত চার বছরের শিশু সিফাত হোসেন তাদের সন্তান।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাহনাজ বেগম তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে বাগজানা রেলগেট এলাকা ঘোরাঘুরি করছিলেন। তিনি কয়েকবার মুঠোফোনে কথাও বলছিলেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে সেখানকার একটি দোকানে বিস্কুট-পানি খান। এরপর তারা মা-ছেলে রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে পাঁচবিবির দিকে রওনা দেন। বাগজানা রেলগেটের একশ গজ দূরে যেতে পঞ্চগড়গামী ‘একতা এক্সপ্রেস’ট্রেন হুইসেল দিয়ে আসে।

ট্রেনটি তাদেরকে অতিক্রম করছিল। এ সময় ছেলেকে কোলে নিয়েই চলন্ত ট্রেনের নিচে শাহনাজ ঝাঁপ দেন। এতে তার ছেলে ট্রেনে ধাক্কা লেগে ছিটকে লাইনের পাশে পড়ে মারা যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর শাহনাজকে মৃত অবস্থায় লাইনের ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে মা ও ছেলের ছিন্নভিন্ন মরদেহের পাশে পাওয়া ভাঙা একটি মুঠোফোনের সূত্র ধরে তাদের দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন স্থানীয়রা। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

সান্তাহার রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তার হোসেন বলেন, পাঁচবিবির বাগজানা রেলগেট এলাকায় মা ও ছেলে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি আত্মহত্যা বলে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন।

চম্পক কুমার/আরএআর