টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ফারুক আহাম্মেদ রাজুকে হত্যার দায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে রফিক (২৫), একই জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর গ্রামের ইউনুছ মিয়ার ছেলে নাজমুল সিকদার(২০), দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী গ্রামের মালু মিয়ার ছেলে মান্নান (২৭) ও দক্ষিণ ভিংলাবাড়ী গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে সুমন (২৮)। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় অনুপস্থিত ছিলেন।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জে ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে ব্যবসায়ী ফারুক আহাম্মেদ রাজুর পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাকে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে তার শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়ে দেহটিকে একটি মাঠে বালুচাপা দিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ বালুর মাঠে গিয়ে চাপা দেওয়া অবস্থায় মানুষের হাত দেখতে পেয়ে পুলিশকে অবগত করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর পাশের একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে ব্যবসায়ী ফারুকের কাটা মাথা উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন এসআই আনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১১ মে দণ্ডিত আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে এলে রাষ্ট্রপক্ষে ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি মো. মান্নান মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামি মো. রফিক মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় প্রদান করেন।

আরিফ আজগর/এমজেইউ