যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার রফিকুল ইসলামকে মারধর করে ফেসবুকে ক্ষমা চাইলেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল আসাদ রাসেল।  

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন— বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসে সব সময়ই সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সম্মান করে থাকে। আমরা যারা এই অফিসে নিয়মিত যাই তারাও এই বিষয়টা মাথায় রাখি। ৮ জুলাই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমার আচরণে কোনো সাংবাদিক ভাই যদি ব্যথিত হয়, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে কোনোদিন যাতে এমন কিছু না ঘটে আমি সতর্ক থাকব।

এ দিকে মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভার আগে মাহমুদুল আসাদ রাসেলকে শোকজ করার নির্দেশ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে এই নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।  

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহের কাজে যান দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার
রফিকুল ইসলাম। এ সময় তার ওপর অতর্কিত হামলা করেন রাসেল এবং তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন। উপর্যুপরি কিল-ঘুষি দিতে থাকে তারা। পরে আওয়ামী লীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা এগিয়ে আসার পরে রাসেল তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সরে পড়ে। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানান। 

উল্লেখ্য, মাহমুদুল আসাদ রাসেল রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা হলেও বসবাস করেন ঢাকায়। সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন আওয়ামী লীগ অফিসে। দলের এক সিনিয়র নেতাকে দেন বিশেষ প্রটোকল। ওই নেতার ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছেন ‘বিশেষ প্রটোকল’ বাহিনী। এই বাহিনীর মাধ্যমে চলে ‘মাস্তানি’। তার বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্য, পদ বাণিজ্য, কুইন সাপ্লাই, পার্টি অফিসে আগত নেতাকর্মী ও কার্যালয়ে কর্মরতদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

এক সময় ছাত্রদল করা রাসেল এখন আওয়ামী লীগ নেতা। শুধু কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রটোকল দিয়ে বাগিয়ে নিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ। নেতাদের প্রটোকল আর নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি তুলে দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা রাসেল গড়েছে অঢেল সম্পত্তি। এ ঘটনায় রাজবাড়ীতেও সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/রাজবাড়ী