টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় এখনো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে মানুষজন পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপক। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কোথাও অপরিবর্তিত আবার কোথাও অবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে, ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রিজ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার এবং মধুপুর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে জেলার কয়েকটি উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদের বাড়িঘর, হাটবাজার, ফসলি জমিসহ অন্যান্য স্থাপনা এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, বাসাইল উপজেলার ৪৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তবে অনেক জায়গায় পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি নদীপাড়ের মানুষজনের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিনে বন্যার পানিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় সাড়ে ৬ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকার ফসলি জমি বন্যাকবলিত হচ্ছে।

জানা গেছে, বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর, দেলদুয়ার, নাগরপুর ও বাসাইল উপজেলার ৫টি গ্রামীণ সড়ক বন্যার পানিতে ভেঙে নতুন নতুন কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বাসাইল উপজেলার আন্দিরাপাড়া এলাকায় একটি গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। ফলে ওই এলাকার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া যমুনাসহ তিনটি নদীর পানি কমতে শুরু করলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষদের দুর্ভোগ কমেনি। বর্তমানে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গোখাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, এ বছর বন্যায় যেসকল মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন তাদের পাশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

অভিজিৎ ঘোষ/এমজেইউ