দফায় দফায় হওয়া বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে যশোর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা। ড্রেন উপচে সড়ক, ঘরবাড়ি ও দোকানপাটসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। এ পানি নামতে কোথাওে কয়েক ঘণ্টা আবার কোথাও কয়েকদিনও লেগে যেতে পারে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।

যশোর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৬ জুলাই) যশোরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১২০ মিলিমিটার। যা এ চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ।

এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় ভারি বর্ষণে শহরের বিভিন্ন সড়কে কোথাও কোমর পানি, কোথাও হাঁটু পানি জমে। বৃষ্টি হলেই যশোর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের অন্তত ১০ থেকে ১৫টি সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে এদিনের বৃষ্টিতে শহরের প্রায় সব সড়ক তলিয়ে যায়। শহরের খড়কি এলাকার শাহ আবদুল করিম সড়ক, ধর্মতলা রোড, আপন মোড়, রাসেল চত্বর মোড়, মুজিব সড়কের রেলগেট এলাকা, নাজির শংকরপুর, খড়কি রূপকথা মোড়, বেজপাড়া চিরুনিকল মোড়, টিবি ক্লিনিক মোড়, মিশনপাড়া, আবরপুর, বিমানবন্দর সড়ক,  শংকরপুর চোপদারপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়ার সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ সড়কেই পানি জমেছে। অনেক সড়কে হাঁটুপানি হয়েছে। এছাড়াও পুকুর, মাঠ-ঘাট, পতিত জমি পানিতে ডুবে গেছে।

এদিকে শহরের বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি অফিসের সামনে পানি উঠেছে। এর মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, শিক্ষাবোর্ড ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যশোর সরকারি এমএম কলেজ, যশোর সরকারি মহিলা কলেজ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস অফিস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খাদ্য গুদাম অন্যতম। এসব প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ মোড় এলাকার মারুফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিবছর একটু বৃষ্টি হলেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে থেকে শুরু করে ওয়াপদা গ্যারেজ মোড় পর্যন্ত ড্রেনের ওপরে পানি উঠে যায়। পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরেও এ বিষয়ে কোনো সমাধান হচ্ছে না।

অপর একজন ওলিয়ার রহমান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পৌরসভা যে ড্রেন করেছে এ ড্রেন সঠিকভাবে করতে পারেনি। পৌরসভা যদি সঠিকভাবে এ ড্রেন করত তাহলে পানি দ্রুত নদীতে গিয়ে পড়ত এবং পৌরবাসী ভোগান্তি থেকে রেহাই পেত।

শহরের স্টেডিয়াম পাড়া এলাকার আব্দুল মালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই স্টেডিয়ামের মেইন গেটের সামনে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। তবে আজকে আপন মন থেকে শুরু করে পৌর হকার্স মার্কেট পর্যন্ত পানিতে একাকার হয়ে গেছে।

শহরের ভোলা ট্যাংক রোড এলাকার রিংকু হোসেন বলেন, গত দশ বছরে এমন বৃষ্টি দেখেনি। এ বৃষ্টিতে শহরের বাড়িঘর থেকে শুরু করে সব জায়গায় পানি।

শহরের খড়কি এলাকার বাসিন্দা প্রকৌশলী কাজী আবু সাঈদ ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, যশোর পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ড্রেনগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। আর ড্রেনগুলোও নাগরিকরা ডাস্টবিনে পরিণত করেছে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কারও করা হয়নি। ফলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান বলেন, শহরবাসীর অসচেতনতার কারণেও নালার পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা, নালা সংস্কার ও নির্মাণের জন্য এমজিএসপি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, মুক্তেশ্বরীর সঙ্গে সংযোগ খাল স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছি।

এ্যান্টনি দাস অপু/এমএ