ওসি মাহবুব আলম

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) তাকে রাজশাহী পুলিশ সদর দপ্তরে প্রত্যাহার করা হয়। 

এর আগে ওসি মাহবুব আলমের নিজ দপ্তরে বসে এক ব্যক্তির সঙ্গে খাম আদান-প্রদানের একটি ভিডিও ফাঁস হয়। এক মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ভিডিও নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। তবে ওসির কাছ থেকে খাম নিয়ে আবার ওসিকে ফেরত দেওয়া ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, চন্দ্রিমা থানার ওসি মাহবুব আলম তার চেয়ারে বসে আছেন। টেবিলের অপর দিকে চেয়ারে বসে থাকা এক ব্যক্তি বলছেন, ‘মাহবুব ভাই, ভাই উঠব ভাই।’ জবাবে ওসি বলেন, ‘আচ্ছা।’ তখন ওই ব্যক্তি বলেন, ‘একটু কথা বলে যাই।’ ওসি তার দিকে মনোযোগ দিয়ে বলেন, ‘হুম।’ সামনে বসে থাকা ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই, একটা ছোট ইয়ে, খাম দেন।’ ওসি তখন মুচকি হাসেন। এ সময় ওই ব্যক্তি বলেন, ‘মাহবুব ভাই, আপনি আমাকে চেনেন, জানেন, বোঝেন। আমি বিপদে পড়ছি বলেই আপনার কাছে আসছি ভাই। আমি বিপদেই পড়ি।’ তখন তৃতীয় এক কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, ‘দাও।’ তবে ভিডিও ধারণের ক্যামেরা ওই তৃতীয় ব্যক্তির হাতেই ছিল।

এরপর ওসি মুচকি হাসতে হাসতে টেবিলের ড্রয়ার খুলে একটি খাম বের করে দেন। তারপর ওসি তৃতীয় ওই ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘দিলাম ভাই, বুইঝেন। তাকে অবশ্য আগেরটাও আমি হেল্প করছি।’ ওই ব্যক্তি তখন বলেন, ‘আমি জানি, আমি মাহবুব ভাইয়ের কাছে আসলে ভাই কাজ হবে।’ এ সময় ওসি বলেন, ‘না, যথেষ্ঠ হেল্প করছি।’ কথা বলতে বলতে সামনে থাকা ওই ব্যক্তি ভরা খাম টেবিলে এগিয়ে দিলে ওসি সেটি আবার নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেন।

ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি না পাড়তে এ পর্যন্ত আসলাম। বিশ্বাস করেন! আমি আরেক দিন এসে ডিটেইলস বলব, তখন বুঝবেন ও আমাকে কী পর্যায়ে পেরেশানিতে নিয়ে আসছে। না হলে আমি আপনার কাছে আসতাম না যদি অফিশিয়ালি সলিউশন করতে পারতাম আমি। সে জিএম স্যারের কাছে ৪০ জন লোক নিয়ে গেছে রিমুভ ফরম সার্ভিস করার জন্য আমার বোনের। আমি কী বোঝাব বলেন!’ তখন ওসি বলেন, ‘দুজনেই পানিশমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ভাই, আমার বোনের যদি পানিশমেন্ট হয় হোক, কিন্তু এই অপরাধ; অন্যায় যে করে, আর যে সহে—দুজনে সমান অপরাধী।’

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী পুলিশ সদর দপ্তরে চন্দ্রিমা থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহিনুল আশিক/আরএআর