বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলবায়ু ঝুঁকি রোধে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ৩০টিরও বেশি যুব সংগঠনের সদস্যদের একই নেটওয়ার্কের অধীনে সেভ দ্য চিলড্রেন ও এর সহযোগী সংগঠন উত্তরণের সহযোগিতায় একত্রিত করেছে ‘ইয়ুথ অ্যাডাপটেশন ফোরাম’ সাতক্ষীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) সাতক্ষীরা শহরের হোটেল টাইগার প্লাসে কার্য নির্দেশনার শর্তাবলি স্বাক্ষর করার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের তরুণদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের উদ্ভাবন ও সম্মিলিত সহযোগিতাকে দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং নিরাপদ জলের অভাবে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলা করার উদ্দেশ্য নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে সংগঠনটি।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভিন সেজুতি।

তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে তরুণদের এমন একটি নেটওয়ার্ক গঠন করা যা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচেতনতা এবং পানির সুব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করবে। এটা অত্যন্ত মহৎ একটি উদ্যোগ। যুবকদের মাধ্যমেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখবে। আপনাদের জন্য আমার সহযোগিতা সব সময় থাকবে।

এস এম বিপ্লব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোছা. এছমত আরা বেগম, বিসিকি সাতক্ষীরার প্রমোশন কর্মকর্তা পিযুস ঘোষ, ডা. সুব্রত ঘোষসহ সরকারি কর্মকর্তা, সেভ দ্য চিলড্রেন ও উত্তরণের প্রতিনিধিরা।

ইয়ুথ অ্যাডাপটেশন ফোরামের সভাপতি কর্ণ বিশ্বাস বলেন, আমরা তরুণরা চাই ইয়ুথ অ্যাডাপটেশন ফোরামের মাধ্যমে ভালো কাজের সঙ্গে থেকে এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বৃহত্তর পরিবর্তন আনতে। এটি অনেক শক্তিশালী একটি ফোরাম হতে যাচ্ছে। কেননা সাতক্ষীরায় এই প্রথম ৩০টির বেশি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধিরা একসঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে। এই ফোরামের অন্যতম লক্ষ্য জ্ঞান আহরণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে তরুণদের জলবায়ু সম্পর্কিত উদ্যোগসমূহ শক্তিশালী করে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বৃদ্ধি এবং জলের সঠিক ব্যবস্থাপনার নিশ্চিত করা।

ইয়ুথ অ্যাডাপটেশন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বলেন, তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশকে পরিবর্তন করতে চাই। পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার পাশাপাশি আমরা চাই পানির সুব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখতে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষ করে সাতক্ষীরার মতো জেলাগুলো ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রেমালের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই অঞ্চলের মানুষ প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা, আয়রন ও আর্সেনিক-এর কারণে এই অঞ্চলের পানি পান করার জন্য নিরাপদ নয়। জলবায়ু পরিবর্তন তাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, শিক্ষা এবং অর্থনীতি জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব ফেলে। কাজেই এ অঞ্চলের মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু ঝুঁকি রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন।

পরে সংসদ সদস্য লায়লা পারভিন সেজুতি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে কমিটির সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

এমজেইউ