বরিশালের গৌরনদীতে হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে নবজাতক আর রাত ১‌২টার দিকে প্রসূতির মৃত্যু হয়।

মারা যাওয়া প্রসূতির নাম নাজমুন নাহার। তিনি পার্শ্ববর্তী বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের উত্তর চরভুতেরদিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী।

আমিনুল ইসলামের বোন আসমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার দুপুরে ক্লিনিকের চিকিৎসক মুসলিমা জাহান সিজার করেন। সিজারের আগে জানান আমার ভাইয়ের স্ত্রী (নাজমুন নাহার) ঠিক আছেন। অপারেশনে রক্ত লাগবে বলেও জানাননি। সিজার করে জানান নাজমুন নাহারের গর্ভের সন্তান মারা গেছে তবে মা সুস্থ আছে। আমাদের ভাবিকে তারা আমাদের না দেখিয়ে আরও কিছুক্ষণ পর জানান তার অবস্থা গুরুতর। একবার এসে বলে দ্রুত তিন ব্যাগ রক্ত জোগাড় করতে। আরেকবার এসে বলেন পাঁচ ব্যাগ রক্ত লাগবে।

আসমা বেগম আরও বলেন, তারা রোগীর সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে আমাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দিয়ে পরামর্শ দেয় বরিশালের কোনো হাসপাতালে ভর্তি করতে। আমরা সেখান থেকে বরিশালের আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানকার চিকিৎসক রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে আমাদের রোগীকে শুরু থেকেই ডাক্তার সঠিক চিকিৎসা দেননি। তাদের অপচিকিৎসায় আমার ভাইয়ের স্ত্রী ও সন্তান মারা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে ডাক্তার মুসলিমা জাহানের মুঠোফোনে করা হলেও রিসিভ করেননি।

ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের শাহীন বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। তাই আমরা তাকে ভর্তি করাতে চাইনি। তার স্বজনদের পরামর্শ দিয়েছিলাম বরিশালে সিজার করাতে। রোগীর স্বজনদের বারবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমরা ভর্তি করে ডাক্তার সিজার করেছি। সিজারে কোনো সমস্যা হয়নি। পরবর্তীতে প্রসূতি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মারা গেছেন। আমাদের ক্লিনিকে কোনো ভুল চিকিৎসার শিকার হননি রোগী। আমাদের ক্লিনিকে কোনো রোগী মারা যাননি।

গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ব্যাপারে আমাকে কেউ জানায়নি। বিষয়টি আপনার কাছ থেকেই জানলাম। আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি। যদি এমন কোনো অভিযোগ পাই তাহলে ওই ক্লিনিক ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমজেইউ