নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এদেশে তরুণ ছেলেরা মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে। সেই দেশ দুর্নীতিবাজ হতে পারে? এই দুর্নীতিবাজ বানানো হয়েছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া এ দেশটাকে দুর্নীতিবাজ বানিয়েছে। যার বোঝা এখন আমাদের টানতে হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি সমাজে তো আছেই। বাংলাদেশে এটার বিরুদ্ধেই তো আমাদের সংগ্রাম। শেখ হাসিনার সংগ্রামটাও তো এটা। তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে আসার পরে প্রথম কথা কী বলেছিলেন- আমি ক্ষমতা চাই না, এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চাই। এই যে খুন-খারাবি, ৮১ সালে যখন তিনি এসেছিলেন ১৭ মে তখন মুক্তিযোদ্ধারা ভয়ে পরিচয় দিত না আমি মুক্তিযোদ্ধা। রাজাকার আল বদর স্বাধীনতা বিরোধীরা মাথা উঁচু করে গজিয়ে উঠল। সাতক্ষীরায় এটা আপনারাই ভালো জানেন, আমি বলতে যাব না। এই ছিল তো অবস্থা। সেই জায়গা থেকে আজকের মুক্তিযোদ্ধারা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এটা কার নেতৃত্বে হয়েছে। এটা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

তিনি বলেন, আজকে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত হয়েছেন। অনেকেই আছে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট নেই। তাদের কেন নেই, তারা মনে করেছে না আমি তো সার্টিফিকেটের জন্য যুদ্ধ করিনি। কিন্তু আজকে এটা অনেক মূল্যবান বিষয়। অনেকে জাল কাগজপত্র করেও মুক্তিযোদ্ধা হতে চায়। এরাও ধরা পড়ছে আমাদের কাছে। এই যে আমাদের দেশটাকে এই জায়গায় নিয়ে আসা, যে দেশের ৩০ লাখ মানুষ একাত্তরে প্রাণ দিয়েছে, সেই দেশটা কেন দুর্নীতিবাজ হবে। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা এই দেশকে সেই মর্যাদার জায়গায় নিয়ে যাব, যে মর্যাদার ইতিহাস আমাদের ৭১ সালের ছেলেরা আত্মত্যাগের মাধ্যমে তৈরি করেছে। এই যে করাপশনটা হচ্ছে এটার পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাওয়াটা পছন্দের নয়। এই এগিয়ে যাওয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আজকে বিভিন্নভাবে ফাঁদ তৈরি হচ্ছে। আমি সকলকে সতর্ক থাকতে বলব। কেউ যেন ফাঁদের মধ্যে না পড়ে যায়। গতকাল প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন- মহাষড়যন্ত্র চলতেছে। দেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। এই যে দুর্নীতি দুর্নীতি বলা হচ্ছে এটার পেছনে অনেক ষড়যন্ত্র আছে। 

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহন মন্ত্রণালয় করা হচ্ছে। আমরা আগে স্থলবন্দর দেখতাম। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নাম নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। তাই আমাদের স্মার্ট প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট একটি নাম ঠিক করে দিয়েছেন। তিনি এর নামকরণ করেছেন বন্দর, নৌপথ ও সমুদ্র পরিবহন মন্ত্রণালয়। যা সব কিছু কাভার করে। এটা এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।

ভোমরা স্থলবন্দর সম্মেলন কক্ষে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী প্রমুখ। 

আরএআর