বিপৎসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টির ফলে গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি এরইমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এছাড়া তিস্তা, যমুনা, ঘাঘট এবং করতোয়া নদীর পানিও বেড়েছে। পানি বাড়ার কারণে জেলার সুন্দরগঞ্জ, সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কাউনিয়া পয়েন্ট তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ও করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া ও ফুলছড়ি উপজেলার এরান্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ও হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মোল্লার চর ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে তোষাপাটসহ বিভিন্ন ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে।
আরও পড়ুন
ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হাবিব মিয়া বলেন, হঠাৎ করে গত চারদিন ধরে দ্বিতীয় দফায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের বেশ কয়টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া আমাদের চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের রফিক মিয়া বলেন, একদিকে বন্যা অন্যদিকে নদী ভাঙনে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চরবাসীকে একাধিকবার ঘরবাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু আজও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, উজানের ঢলে গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সুন্দরগঞ্জ সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সার্বিক পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
রিপন আকন্দ/জেডএস